ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রবিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গত সোমবার থেকে ক্রমে ঝাঁজ যেন বেড়েই চলেছে। প্রথম দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝামেলা শুরু হয় এবং পরের দিন পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে প্রায় ছ’জনের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলন যেন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের নানা প্রান্তে। রাস্তায় রাস্তায় চরম বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে।
বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা!
যার দরুন পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ভুয়ো খবর ছড়ানো বন্ধ করতে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। কিন্তু ছাত্র বিক্ষোভের এই ঝড়ে একের পর এক প্রাণ চলে যেতে লাগল। প্রায় প্রতি দিনই লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এই আবহে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করে শেখ হাসিনা সরকার। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নামানো হয় বাংলাদেশি সেনা।
বেড়েই চলেছে ছাত্র মৃত্যুর সংখ্যা
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার ফারুক হোসেন ঘোষণা করেন যে, শুক্রবার দুপুর থেকেই পরবর্তী নির্দেশ ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজধানীতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে শুক্রবারও আরও অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সরকারি তরফে নির্দিষ্ট করে মৃতের সংখ্যা বলা হয়নি। কিন্তু বেসরকারি সূত্রে খবর সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫-এ।
সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ছাত্র ছাত্রীদের সদস্যদের দেখা গিয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে এদিন সকাল থেকে হেলিকপ্টারে টহল দেওয়া হয়। অন্যদিকে, উত্তপ্ত অবস্থার জেরে বাতিল হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ঢাকায় কোনও ট্রেন প্রবেশ করবে না। এবং ঢাকা থেকে কোনও ট্রেন কোথাও যাবেও না। এদিকে এখনও অনেক ভারতীয় ছাত্র ছাত্রী আটকে পড়েছে বাংলাদেশে।
প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরছে ভারতীয় পড়ুয়াদের দল
তবে খবর সূত্রে জানা গিয়েছে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরা এবং মেঘালয় দিয়ে শুধু শুক্রবারই ভারতে ফিরেছেন ৩০০-র বেশি পড়ুয়া। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও না কোনও কোর্স করছিলেন তাঁরা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই আপাতত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। দেশে ফেরার জন্য মূলত দু’টি রাস্তা ধরেছিলেন তাঁরা। এক দল ফিরেছেন ত্রিপুরায় আগরতলার কাছে আখুরা স্থলবন্দর হয়ে। অন্য দল মেঘালয়ের ডাওকি স্থলবন্দর হয়ে ভারতে ঢুকেছেন।
আরও পড়ুনঃ ১৮ আগস্ট মোহনবাগান Vs ইস্টবেঙ্গল, শুরু হল ডুরান্ড কাপের টিকিট বিক্রি, পাবেন কোথায়?
হরিয়ানা থেকে চট্টগ্রামের মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন আমির। দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া আমির বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল। ইন্টারনেট কাজ করছে না, মোবাইল পরিষেবাও বন্ধ। চোখের সামনে একের পর এক মানুষকে মরতে দেখে আর ঝুঁকি নিতে পারিনি। প্রাণ বাঁচাতে আমরা কলেজের কয়েকজন ছাত্র দেশে ফিরে এসেছি।’