ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দেশের অন্দরে এইমুহুর্তে চলছে লোকসভা নির্বাচন। দিল্লীবাড়ি দখলের লড়াইয়ে একের পর এক বিরোধী দল যেন চাতকপাখির মত তাকিয়ে রয়েছে। এদিকে দেশের বাইরে শত্রুপক্ষ পাকিস্তান আরও একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। পাক সরকারের বিস্ফোরক মন্তব্যে হতবাক গোটা দেশ। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চলছে ধুন্ধুমার কাণ্ড।
১৯৯৯ সালে ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু সেই চুক্তি যে পাকিস্তান নিজ হাতে ভঙ্গ করেছিল, সেই কথা সম্প্রতি নিজের মুখে স্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। আর এরই মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এক বাসিন্দা ফরহাদকে নিয়ে পাকিস্তানের আদালত ও সরকারের মধ্যে টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ফরহাদ গত ১৪ মে রাওয়ালপিন্ডি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। নিখোঁজের পরের দিন তাঁর স্ত্রী উরুজ জয়নব তাঁকে খুঁজে আনার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানান। এদিকে গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মনসুর উসমা আওয়ান জানান যে ফারহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের পুলিশের হেফাজতে আছেন।
অসন্তোষ পাক অধিকৃত অঞ্চলে!
পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে তাদের হেফাজতে আছেন ফারহাদ। ধীরকোট এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই মামলা শোনেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মহসিন আখতার কন্যানী। সেইসময় পাক সরকার পক্ষের আইনজীবী মুনাওয়ার ইকবাল দাবি করেন যে আগামী রবিবার পর্যন্ত হেফাজতে থাকবেন ফারহাদ। তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে পরিবারের সদস্যদের। অন্যদিকে বেআইনিভাবে আটকে রাখার মামলা বন্ধ করে দেওয়ার আর্জি জানান পাকিস্তানের অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট কাশ্মীরি কবি আহমেদ ফারহাদ খোঁজ সংক্রান্ত মামলা বাতিল করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জন্য হয়েছে, ফরহাদকে যেদিন আদালতে হাজির করা হবে সেদিনই মামলা শেষ হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৭ জুন।
চাঞ্চল্যকর দাবি পাক সরকারের
এদিকে পাক সরকার এর ভয়ংকর দাবিতে চোখ ছানাবড়া পাকিস্তানের জনগণের। তাঁরা দাবি করছে যে, ‘আহমেদ ফরহাদকে ইসলামাবাদ আদালতে পেশ করা যাবে না। কারণ PoK আমাদের নয়। বরং এটি একটি বৈদেশিক অঞ্চল। ওই অঞ্চলে পাক সরকারের সঙ্গে আলোচনাভুক্ত একটি সরকার চলে। তবে সেখানে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা কোনওভাবেই লাগু হয় না।’ এরপরে, হাইকোর্টও সরকারি আইনজীবীর দাবিতে অবাক হয়ে যায় এবং জানায় যে, ‘অধিকৃত কাশ্মীর যদি পাকিস্তানের অংশ না হয় তাহলে কীভাবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং পাকিস্তানি রেঞ্জার্স ওই এলাকায় প্রবেশ করল?’ যদিও এর সদুত্তর মেলেনি পাক সরকারের তরফ থেকে।
আরও পড়ুনঃ ফের মুখ পুড়ল রাজ্যের! পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় যা নির্দেশ দিল হাইকোর্ট, চাপে সরকার
তবে কূটনীতিকদের মতে, পাক সরকারের এহেন মন্তব্য, আরও সহজ করে দিল ভারতের রাস্তা। বরাবর গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে অখণ্ড ভারতের কথা বলা হচ্ছে। তাইতো মোদি সরকারের একাংশ দাবি জানাচ্ছে যে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয় পেলে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে। কারণপাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর আদতে ভারতেরই অংশ তা বারবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।