ইসলামাবাদঃ গত কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক মন্দার খবর চোখে পড়ছে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশের মানুষের জীবনধারার উপর। কারণ, এর কারণে দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে, সেই সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে ইমরান খান ও শাহবাজ শরীফের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে। এইসব অস্থিরতার কারণে সেখানেও পথে নেমে প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানি নাগরিকদের।
আর এবার একটি সরকারি বিলকে কেন্দ্র করে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়লো পাকিস্তানে। সম্প্রতি পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে ‘পিসফুল অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড পাবলিক অর্ডার বিল, ২০২৪’ পাশ হয়েছে, যা সারা দেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এই নতুন আইনটি মূলত ইসলামাবাদে জনসমাবেশ এবং প্রতিবাদের নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করার জন্য আনা হয়েছে। অর্থাৎ, গণতান্ত্রিক দেশে যে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করার অধিকার দেওয়া হয়, সেই অধিকার ক্ষুন্ন করছে পাক সরকারের এই নতুন বিল। তাই এই বিলকে কেন্দ্র করে ফের একবার অশান্ত হতে পারে পাকিস্তান।
পাকিস্তান সরকারের নতুন এই বিলে কি বলা হয়েছে?
‘পিসফুল অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড পাবলিক অর্ডার বিল, ২০২৪’ নিয়ে পাকিস্তানে ফের অশান্তি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই সরকারি বিলে বলা হয়েছে যে, কোনও অনুমতি ছাড়া জনসমাবেশের আয়োজন করলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে। আইন অনুযায়ী, ইসলামাবাদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনসমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা পাবেন এবং প্রয়োজন হলে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করতে পারবেন। পুনরাবৃত্ত অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তির মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানছে সরকার
সরকারের এই নতুন বিলটি নিয়ে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই বিলটি সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার একটি প্রচেষ্টা। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ এবং অন্যান্য বিরোধীদলগুলো এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে খর্ব করছে এবং দেশের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হানছে। একইসঙ্গে এই বিলটি পার্লামেন্টে আলোচনা না করেই পাশ করানোর অভিযোগও এবার সামনে আসছে।
নতুন বিল প্রসঙ্গে পাক সরকারের সাফাই
এই নতুন বিলটি নিয়ে পাকিস্তান সরকারের দাবি, এই আইনের মাধ্যমে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিঘ্নিত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজধানীতে ক্রমাগত আন্দোলন ও প্রতিবাদের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় অসুবিধা দেখা দিয়েছে, যা এই আইন প্রণয়নের পেছনের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তান সরকার।