দেবপ্রসাদ মুখার্জী: সামরিক ক্ষেত্রে ফের ধাক্কা খেল পাকিস্তান। এবার আমেরিকার এক পদক্ষেপের জেরে জব্দ হবে পাকিস্তান ও চিনের সমস্ত গোপন পদক্ষেপ। আসলে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত চিনা কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিকে স্বচ্ছ করার অভিযানের অংশ হিসেবে আমেরিকা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আমেরিকা একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে তারা চিনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। কিন্তু কেন?
বেশ কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানে চলছে ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণা। আর এই গবেষণায় চিন তাঁদের মদত করছে। বিশেষ করে কিছু চিনা কোম্পানির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সরঞ্জাম সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। আর এর মাধ্যমে দেদার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে পাকিস্তান, যা ভারতের জন্য বিপদের সংকেত হতে পারে। আমেরিকার আপত্তি এখানেই। যেখানে গোটা বিশ্ব অস্ত্রের বৃদ্ধির বিরোধিতায় শান্তি চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছে, সেখানে চিনা কোম্পানির মদতে পাকিস্তান রমরমিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।
চিনা কোম্পানি থেকে কি কি সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে?
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন যে পাকিস্তানের জাতীয় উন্নয়ন কমপ্লেক্স এবং বেইজিংয়ের অটোমেশন ফর মেশিন বিল্ডিং গবেষণা ইনস্টিটিউটে এইসব ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত কাজকর্ম চলছে। আর চিনের এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের শাহিন-৩ মিসাইল, আবাবিল সিস্টেম এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য সরঞ্জাম সরবরাহের অভিযোগ এনেছে আমেরিকা। সেই কারণেই এই প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে আমেরিকা।
পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের জন্য কেন বিপজ্জনক?
পাকিস্তানের শাহিন-৩ ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের জন্য বিপদের সংকেত হতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ২,৭৫০ কিমি। তাই এটি ভারতের যেকোনো শহরে আঘাত হানতে সক্ষম। পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডারে এটিই সবচেয়ে দীর্ঘ রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র। অন্যদিকে, পাকিস্তানের আরেক ক্ষেপণাস্ত্র, যার নাম আবাবিল সিস্টেম, সেটির রেঞ্জ ২,২০০ কিলোমিটার। এটিও ভারতের জন্য বিপদ বাড়াতে পারে।
আমেরিকার কঠোর পদক্ষেপে না-খুশ চিন
আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার এই নিষেধাজ্ঞামূলক পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে চিন। ওয়াশিংটনে থাকা চিনা দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে যে চিন এই একতরফা নিষেধাজ্ঞার তীব্র বিরোধিতা করছে। একইসঙ্গে দেশের কোম্পানি ও জনগণকে সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চিনা দূতাবাস।
মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় পাকিস্তান
বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে সই করেছে। কিন্তু পাকিস্তান এখনো এই চুক্তির প্রতি সহমত দেখায়নি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চিনের প্রকাশ্য সমর্থন পাচ্ছে। এই কারণে চিন ও উত্তর কোরিয়ার সাহায্য নিয়ে রমরমিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছিল ভারতের এই প্রতিবেশী দেশ। তাই আমেরিকার সিদ্ধান্তে না-খুশ হয়ে পাকিস্তান এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে।