ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: স্বার্থপর এই দুনিয়ায় যেখানে চারিদিকে হিংসা, দাঙ্গা, মারামারি এবং খুন হচ্ছে সেখানে নিঃস্বার্থ ভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মত ঘটনাগুলি এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। আর সাহায্যের নিরিখে বয়স কখনই কোনো ফ্যাক্টর হয় না। অর্থাৎ একজন বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাও কোনো তরুণ প্রজন্মকে ঠিক সাহায্য করতে পারে। সে শারীরিক দিক দিয়ে হল কিংবা মানসিক দিক দিয়ে। সম্প্রতি এমন এক উদাহোরো বেশ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন এই বৃদ্ধা
ঘটনাটি গোয়ালিয়রের। সেখানে ৯২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা সরলা ত্রিপাঠি থাকতেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে রেলস্টেশনে আসা-যাওয়া যাত্রীদের জল সরবরাহ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে আপনার নিশ্চয়ই মনে হবে যে পেশাভিত্তিক কোনো কাজ৷ কিন্তু না, সে সম্পূর্ণ এটি যাত্রীদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিনামূল্যে এই কাজ করেন। তাঁর এই বয়সে এই কঠোর পরিশ্রমী সেবা দেখে যাত্রীরাও বেশ বিস্মিত হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, নিত্যযাত্রীরাও এখন সরলা ত্রিপাঠীকে চিনতে শুরু করেছেন এবং আদর করে তাকে ‘দাদী’ বলে ডাকতে শুরু করেছেন।
কেন করেন এই কাজ?
কিন্তু কেন তিনি এই কাজ করেন তা জানতে সরলাদেবীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ট্রেন থামলে অনেক যাত্রীরা গোয়ালিয়র স্টেশনে জল ভর্তি করতে নামেন। সেই সময় অনেক যাত্রী তাদের জলের বোতল ভর্তি করতে গিয়ে ট্রেন মিস করেন। তাই তারা যাতে ট্রেন মিস না করেন তাই তিনি যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য এই ধারণাটি নিয়ে এসেছিলেন। অর্থাৎ যাত্রীদের স্বার্থেই তাঁর এই উদ্যোগ। এদিকে এই বয়সে এই পরিশ্রম নিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে সরলা ত্রিপাঠির পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেকবার তাঁকে তার বয়সের কারণে স্টেশনে যেতে বাধা দিলেও, সে রাজি না হয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এবং মায়ের মত প্রত্যেক যাত্রীর জলের আবদার পূরণ করে। তাঁর এই উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে।
তবে ঘটনাটি সাম্প্রতিককালে ঘটেনি। এটি আসলে ২০১৯ সালে ঘটেছিল। সেই সময় এক দীপাবলির দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ৯২ বছরের সরলা দেবীর এই অনুপ্রেরণার কথা তুলে ধরেছেন। এবং বলেছেন, ‘ আমি শ্রদ্ধার সাথে ভারতের এই সমস্ত লক্ষ্মীকে প্রণাম করি। যাঁরা দেশের মানুষকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসা এবং সুরক্ষা প্রদান করে চলেছেন।’