ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: কাজের ব্যস্ততার মাঝে দীর্ঘ ছুটি পাওয়া বেশ কষ্টকর। আর যখনই ছুটি মেলে আগে ভাগে কোনো প্ল্যান করা থাকে না বলে মাথায় হাত পড়ে বেরোনোর সময়। কারণ উদ্দেশ্য একটাই সেটি হল কম সময়ের মধ্যে অনেক জায়গা ভ্রমণ করা। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে কোনো কিছুই সম্ভব হয় না। তাই আজকের প্রতিবেদন আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে কাছাকাছি দূরত্বের মধ্যে কিছু অফবিট এলাকার হদিশ নিয়ে। যা আপনার ক্লান্তি বোধ নিমেষেই দূর করবে।
নিমপীঠ ও কৈখালি
হাতে যদি ২-৩ দিন ছুটি থাকে, তাহলে সুন্দরবনের আবহাওয়া উপভোগ করতে মাতলা নদীর কাছে পরিবার এবং বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ঘুরে আসাই যায়। এই সময় অর্থাৎ বর্ষাকালে অপরূপ সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে এই মাতলা। আর সেই মাতলা নদীর পাড়ে নতুন ‘রিভারসাইড’ হল কৈখালি। কলকাতা থেকে কয়েকঘণ্টার সফর মাত্র। কৈখালি যাবার আগেই পথের পাশে পড়বে নিমপীঠের রামকৃষ্ণ আশ্রম। এই নিমপীঠ রামকৃষ্ণ মিশনের কাছেই রয়েছে সারদা মায়ের আশ্রম। শান্ত পরিবেশ। সেখানে অনায়াসে বেড়ানো যায়। কাজেই সপ্তাহান্তে বেড়ানোর সবচেয়ে ভাল জায়গা বললে ভুল হবে না। নির্জন, নিরিবিলি অনুপন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর থাকে এই কৈখালি।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেন ধরে যেতে হবে জয়নগর। সেখান থেকে নিমপীঠ বা সরাসরি কৈখালি যাবার অটো পাওয়া যাবে। এছাড়া গাড়ি বা বাইকে সহজেই যাওয়া যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৈখালিতে। এখানে খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে।
ভাটিন্ডা জলপ্রপাত, ধানবাদ
অনেকেই হাতে ১ দিনের ছুটি পেলে জবরদস্ত কোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে। ইচ্ছা তো হয় পাহাড়, জঙ্গল এবং সমুদ্র তিনটিই দেখার। কিন্তু তিনটি একদিন একই জায়গায় দেখা তো দুষ্কর। তবে চিন্তা নেই এমন জায়গা এখন কলকাতা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। একদিনের জন্য ঘুরে আসুন ধানবাদের ভাটিন্ডা জলপ্রপাত দেখতে। যেটি কিনা পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের একেবারে সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। আর এই সময় সেখানকার জলপ্রপাত যেন এক আলাদাই রূপ দান করে। যা নিমেষেই সারাদিনের ক্লান্তি, ব্যস্ততা দূর করে দেয়।
কীভাবে যাবেন?
সকাল ৬টা বেজে ৫ মিনিটেই হাওড়া স্টেশন থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেসে চেপে সকাল সাড়ে ৯ তার মধ্যেই পৌঁছানো যাবে ধানবাদ স্টেশনে। ধানবাদ স্টেশনে নেমে ভাটিণ্ডা ওয়াটার ফলস যাওয়ার জন্য গাড়ি বুক করতে হবে। এরপর সেই গাড়িতে চেপেই সবুজ ঘেরার রাস্তার মধ্যে দিয়েই চলে আসা যাবে ভাটিণ্ডা ওয়াটার ফলস-এ।
দুয়ারসিনি, পুরুলিয়া
মাত্র ১ দিনের ছুটিতে যদি জঙ্গলে ঘুরতে যেতে চান তাহলে চোখ বন্ধ করে কোনো কিছু না ভেবে চলে যান পুরুলিয়ার দুয়ারসিনি এলাকায়। গা ছমছমে জঙ্গলের ভিতর ছোট ছোট কটেজে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চার মারাত্মক থ্রিল আনবে ট্রিপে। ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝে রয়েছে শাল-পিয়াল-শিমুলের বন। চাইলে চলে যেতে পারেন ঘাটশিলাতেও। এখানে রয়েছে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘গৌরীকুঞ্জ’।
কীভাবে যাবেন?
সড়কপথে যেতে চাইলে, কলকাতা থেকে বান্দোয়ান বাস যায়, সেখান থেকে ছোট গাড়ি বা ট্রেকারে দুয়ারসিনি যাওয়া যায়। এছাড়াও ট্রেনে করে যেতে চাইলে প্রথমে ঘাটশিলা যেতে হবে। এর জন্য রয়েছে বহু ট্রেন। হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী, ইস্পাত এক্সপ্রেস কিংবা লালমাটি এক্সপ্রেস ধরতে পারেন। চাইলে পুরুলিয়া স্টেশনে নেমে সেখান থেকে বান্দোয়ান হয়েও যাওয়া যেতে পারে।