সমগ্র বিশ্বের মধ্যে ভারত হল একমাত্র দেশ, যেখানে ভিন্ন ধর্মের সংস্কৃতির মেলবন্ধনে ভরপুর। তবে শুধু এখানেই শেষ নয়। প্রাচীন যুগ থেকে এখনও পর্যন্ত ভারতে এমন অনেক মন্দির রয়েছে যার ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ও উল্লেখযোগ্য। যদিও ভারতে প্রাচীন মন্দিরের অভাব নেই। তাদের মধ্যে কিছু কিছু মন্দির এমনও আছে যা গঠনই তাদের পরিচয় এবং কিছু মন্দির এমনও রয়েছে যাদের সম্পর্কে প্রচলিত অনেক নানা পৌরাণিক গল্প জড়িয়ে রয়েছে। আবার এমন অনেক মন্দির রয়েছে যা যুগ যুগ ধরে ভারতের ধনী মন্দিরের তালিকায় নিজেদের তুলে ধরেছে। আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেই সকল মন্দির সম্পর্কে জেনে নেব।
পদ্মনাভ স্বামী মন্দির
ভারতবর্ষের ধনী মন্দিরের তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছে ‘পদ্মনাভ স্বামী মন্দির’ (Sree Padmanabhaswamy Temple)। এটি কেরালার তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত। ভগবান শ্রী বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে এই মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল ভগবানের মূর্তিটি। যা পুরোটাই সোনা দিয়ে তৈরি। যার দাম বাজারে ৫০০ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে মন্দির এবং এর সম্পদগুলি পদ্মনাভস্বামীর অন্তর্গত এবং দীর্ঘকাল ধরে একটি ট্রাস্ট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যা ত্রাভাঙ্কোর রাজপরিবারের নেতৃত্বে রয়েছে । তবে রিপোর্ট অনুযায়ী এই মন্দিরে মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১,২০,০০০ কোটি টাকা।
বৈষ্ণো দেবী মন্দির
বৈষ্ণো দেবী মন্দির , শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মন্দির এবং বৈষ্ণো দেবী ভবন নামেও পরিচিত। এটি জম্মু কাশ্মীরের কাটরাতে অবস্থিত। ভারতের অন্যতম ধনী মন্দিরের তালিকায় থাকা এই মন্দির দর্শন করতে লাখ লাখ মানুষ আসেন এখানে (Vaishno Devi Temple)। এমনকি বিদেশী পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মত থাকে। তাই ভগবানের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভক্তের অনুদান যেন উপচে পড়ে। এই মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ১৫৮৪.৯৬ মিটার অর্থাৎ ৫২০০ ফুট। এই মন্দিরের বিশেষ উৎসব গুলোর মধ্যে অন্যতম হল নবরাত্রি পালন। খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয় এই অনুষ্ঠান। জানা গিয়েছে এই মন্দিরের দান বাক্সে বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দান জমা পড়ে।
মীনাক্ষী মন্দির
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মাদুরাই শহরে অবস্থিত মীনাক্ষী মন্দির (Meenakshi Temple) ভারতের অন্যতম ধনী মন্দিরের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এই মন্দিরকে মীনাক্ষী আম্মান মন্দির বা মীনাক্ষী সুন্দরেশ্বর মন্দিরও বলা হয়ে থাকে। এই মন্দিরটি দেবী পার্বতীর মীনাক্ষী রূপ এবং তার স্বামী শিবের সুন্দরেশ্বর রূপের উদ্দেশ্যে নিবেদিত করা হয়েছে। এই মন্দিরের গঠনগত রূপ আকর্ষিত করে বহু ভক্তদের। সেই মন্দিরের জাঁকজমক দেখার মত। মন্দিরের বার্ষিক আয় প্রায় ৬ কোটি টাকা।
জগন্নাথ মন্দির
বাঙালির অন্যতম সমুদ্র প্রিয় স্থান হল পুরী। সেখানকার জগন্নাথ দেবের মন্দির ধনী মন্দিরের তালিকায় নাম খোদাই করে নিয়েছে। উড়িষ্যা রাজ্যের এই পুরীতে অবস্থিত এই মন্দিরটি (Jagannath Temple) অত্যন্ত প্রাচীন ও বিশাল। লাখ লাখ দর্শনার্থী এই মন্দিরের টানেই এত দূর থেকে আসে। আর অনুদান করে একগুচ্ছ টাকা। এই মন্দিরের সম্পদ অপরিমেয়। তবে এই মন্দিরের সঠিক সম্পত্তির পরিমাণ কত সে সম্পর্কে সঠিক ভাবে কোনও তথ্য মেলে না। তবে অনুমান করা হয় মন্দিরে ১০০ কেজির বেশি সোনা ও রুপো আছে।
সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির
শ্রী সিদ্ধিবিনায়ক গণপতি মন্দির হল গণেশকে উৎসর্গ করা একটি হিন্দু মন্দির (Shree Siddhivinayak Temple)। এটি ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের প্রভাদেবী এলাকায় অবস্থিত। এই মন্দির মুম্বাইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় হিন্দু মন্দির হওয়ার পাশাপাশি ধনী মন্দির। প্রতি বছর এখানকার ধনী ব্যবসায়ীরা একটি মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান দিয়ে যায়। গনেশ চতুর্থীতে এখানে ধুমধাম করে পুজো করা হয়। এই মন্দিরের গড় বার্ষিক আয় ৪৮ কোটি টাকা থেকে ১২৫ কোটি টাকার মধ্যে।