ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা CA পরীক্ষা ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি। বরাবরই দেখা যায় বেশ মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরাও এই পরীক্ষায় সফল হতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যায়। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে চেষ্টার জোরে খুব সহজেই নিজের সাফল্যের পথ ঠিক করে নেয়। ঠিক তেমনই সম্প্রতি এক গরীব ঘরের চা বিক্রেতার মেয়ে নিজের এই কঠিন জীবনে এক সাফল্যের অধ্যায় রচনা করে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করল।
CA হওয়ার লড়াইয়ে জয় চা বিক্রেতার মেয়ের
গত ১১ জুলাই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা CA পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছিল। সেই তালিকায় নিজের নাম দেখতে পাওয়ায় আর সামলাতে পারেনি দিল্লির বাসিন্দা অমিতা। আসলে এই তরুণীর বাবার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য তিনিও বাবার সঙ্গে হাত লাগাতেন। ছোট বয়সেই স্বপ্ন ছিল তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার। কিন্তু সমাজ বেশ নিষ্ঠুর। চা বিক্রেতার মেয়ে হয়ে এ সব স্বপ্ন দেখা বেশ অনুচিত বলেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার জন্য বেশ চাপ দিত অমিতার বাবাকে। কিন্তু লোকের কথায় কান দিতে রাজি ছিলেন না অমিতা এবং তাঁর বাবা।
কিন্তু অমিতার মেধার প্রতি তাঁর বাবা-মায়ের ভরসা ছিল অগাধ। সেই ভরসাই অমিতার জীবনে এক বিরাট প্রাপ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এই সাফল্য সম্পূর্ণ তাঁদের জন্য। সম্প্রতি লিঙ্কডইন নামক এক অ্যাপের মাধ্যমে তিনি তাঁর জীবনের এই সেরা মুহূর্ত তুলে ধরে একটি লেখা পোস্ট করে। যেখানে তিনি লেখেন, ‘পড়াশোনায় তেমন ভাল ছিলাম না। কিন্তু সিএ হতে চেয়েছিলাম। ১০ বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। পরীক্ষায় পাশ করার পর আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। বাবাকে জড়িয়ে এই প্রথম বার কাঁদলাম আমি। বাবা-মায়ের সব স্বপ্নপূরণ করতে চাই আমি। তাঁদের জন্য বাড়িও তৈরি করব।’
ভাইরাল ভিডিও
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন আগে সমাজমাধ্যমে অমিতা এবং তাঁর বাবার আবেগঘন মুহূর্তের সেই ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে যে, বাইকের উপর বসে রয়েছেন অমিতার বাবা। পিঠের ব্যাগটি বুকের সামনে নেওয়া। মাথায় হেলমেট পরে রয়েছেন। এক নজরে দেখলে মনে হয়, বাইক চালিয়ে কোথা থেকে ফিরছিলেন তিনি। সেই অবস্থায় অমিতা তাঁর বাবাকে জড়িয়ে অঝোরে কেঁদে ফেলেন। এবং কম্পিত গলায় বলছেন, ‘বাবা, আমি সিএ হয়ে গিয়েছি।’ বোধ হয়, চোখের জল বাধ মানে না। আশীর্বাদ দিতে মাথায় হাত রেখে অমিতাকে বুকে জড়িয়ে রইলেন তাঁর বাবা। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছিল তাঁরও। অমিতার এই সাফল্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটাগরিকদের শুভেচ্ছা উপচে পড়ে।