প্রতিদিন সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল খাওয়া জরুরী। আর এই সুপরামর্শ হামেশাই দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা এবং চিকিৎসকরা। কিন্তু ফলপ্রিয় মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ফল হিসেবে কিন্তু একটাই নাম বিরাজ করে। হ্যাঁ, ঠিক তাই, সেটি হল আম। যার জন্য সকলে তীব্র গরমও সহ্য করতে পারে। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এই গ্রীষ্মকালীন ফল সকলের মনে রাজার হালে বিরাজ করে। সেই কারণেই এক ‘ফলের রাজা’ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি ‘ফলের রানী’ কাকে বলে? অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই এই ভেবে যে রানীও আবার হয় নাকি! হ্যাঁ, ঠিকই হয়। আর সেই ফলের সঙ্গে আবার আমের অনেক মিল ও রয়েছে। চলুন আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক ফলের রানীর নাম।
ফলের রানী কে ?
মিষ্টি রসালো আম খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বড্ড দুষ্কর। প্রতি বছর গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে একমাত্র এই ফলই মানুষকে তৃপ্তি প্রদান করতে সক্ষম। রাজা যদি প্রজাদের এমন মন জয় করতে পারে তাহলে রানীও কম যায় না। আর সেই ফলের রানীর নাম হল ‘ম্যাঙ্গোস্টিন’ অর্থাৎ Mangostin । অনেকেই হয়তো জানেন না এই ফলের নাম। কিন্তু ‘ম্যাঙ্গোস্টিন’ নামের গাব জাতীয় ফলকেই বলা হয় ফলের রানী। কিন্তু এর উৎস ভারতবর্ষ নয়। বিরাজ করে অন্য দেশে।
জানা গিয়েছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে পাওয়া যায় এই ফলটি। গঠনগত দিক থেকে এই ফল উচ্চতায় ১০০ মিটার হয়ে থাকে। শুধুমাত্র ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই গাছ বৃদ্ধি পায়। তবে ফল ধরতে সময় নেয় সাত থেকে নয় বছর পর্যন্ত। কখনও কখনও দশ থেকে বিশ বছরের অপেক্ষাও করতে হয়। এর বাইরের স্তরটি বেগুনি রঙের হয় আর ভিতরের অংশটি একটু সাদাটে হয় যা বীজ-সহ দু-ভাগে বিভক্ত থাকে।
কেন ফলের রানী বলা হয়?
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এই ‘ম্যাঙ্গোস্টিন’ ফলটিকে ফলের রাণী উপাধি দিয়েছিলেন আমেরিকান প্ল্যান্ট এক্সপ্লোরার এবং উদ্ভিদবিদ ডেভিড ফেয়ারচাইল্ড। ১৯০৩ সালে তাঁর লেখা বই এক্সপ্লোরিং ফর প্ল্যান্টস-এ ম্যাঙ্গোস্টিনকে ‘রানী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম Garcinia mangostana। স্বাদের দিক থেকে কিছুটা মিষ্টি, টক, রসালো হয়। এবং সামান্য আঁশযুক্ত হয়ে থাকে। যা এককথায় “চমৎকার এবং সুস্বাদু”। জানা যায় ম্যাঙ্গোস্টিন ফলটি ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার প্রিয় ছিল। তিনি নাকি ১০০ পাউন্ড স্টার্লিং পুরষ্কার দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।
এই ফলের গুণাগুণ
পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসাবিদদের মতে ম্যাঙ্গোস্টিন ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন, যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর করতে পারে। ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।