১০ হাজার টাকার ঋণ দেন স্বামীকে, আজ ৭৩৪০০০০০০০০০০ কোম্পানি! চেনেন এই মহিলাকে?

Published on:

sudha murty

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দেশের শীর্ষস্থানীয় আইটি সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ইনফোসিস। বিদেশেও যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এই সংস্থার। তরুণ প্রজন্মের একাংশ এই সংস্থায় কাজ করার জন্য যেন মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু এই কোম্পানি হতে তোলার পিছনে যে কত বড় ইতিহাস, স্বার্থত্যাগ রয়েছে তা সকলের কাছেই অজানা। আর এই কোম্পানি তৈরির লক্ষ্যে নারায়ণ মূর্তির সঙ্গে সুধা দেবীর অবদান যে কতখানি তা আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণটা জেনে নেব।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সুধাদেবী!

১৯৫০ সালে ১৯ আগস্ট কর্নাটকে জন্মগ্রহণ করেন সুধা মূর্তি। তিনি নিজে এক জন ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ‘টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি’তে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তিনি কাজ করেছেন। সুধাদেবী ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। শুধু তা-ই নয়, বেঙ্গালুরুর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবেও তিনি কাজ করেছেন। কন্নড়, মারাঠি, ইংরেজি-সহ বিভিন্ন ভাষায় তাঁর ৪০টির বেশিও বই আছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে একাধিক কলম লিখেছেন তিনি। আর সাফল্যের প্রতিযোগিতায় সুখ দুঃখের জীবনসঙ্গী হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন তাঁর স্বামীকে।

WhatsApp Community Join Now

ইনফোসিস নির্মাণে বিরাট স্বার্থত্যাগ সুধাদেবীর

১৯৭৮ সালে সুধাদেবীর জীবনে আসে এক নতুন মোড়। দেখা হয় নারায়ণ মূর্তির সঙ্গে। এক অপরের জীবনের পরিপূরক হিসেবে সাত পাকে বাঁধা পড়েন দু’জনে। ব্যবসায়িক কর্মজীবনে কিছু করার জন্য নারায়ণ মূর্তি প্রথমে সফ্টট্রোনিক্স নামে একটি আইটি কোম্পানি খুলেছিলেন। কিন্তু সেই কোম্পানিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দমে থাকেননি। এরপর নতুন ভাবে ব্যবসা শুরুর অঙ্গীকার নেন তিনি। আর সেই ভাবনায় পাশে পেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সুধাদেবীকে। তখন তাঁর কাছে জমানো ছিল ১০২৫০ টাকা ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ২৫০ টাকা বাঁচিয়ে ইনফোসিস নামে কোম্পানি শুরু করার জন্য ১০০০০ টাকা তুলে দেন স্বামী নারায়ণ মূর্তির কাছে। আর আজ সেই কোম্পানিই ৫৮৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদের অধিকারী।

গোড়া থেকেই নারায়ণ মূর্তি তাঁর কাজের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে জড়িয়ে ছিলেন। ফলে সংসারের কাজকর্ম চালানোর জন্য সুধার উপর নির্ভর করতেন নারায়ণ। এমনকি বাড়িতে কী হচ্ছে না হচ্ছে সে নিয়ে নারায়ণের কোনও ধারণা ছিল না। বাড়িতে বাচ্চাদেরকে পরম স্নেহে লালনপালন করে এসেছেন সুধাদেবী। যখন তাঁদের বাচ্চারা বিদেশ যায়, তখন নারায়ণ বুঝতে পারেন এর পিছনে সুধার ভূমিকা কতটা। পরে তিনি সুধাকে নিজের কেরিয়রের পথে এগিয়ে যেতে বলেন‌। এমনকি স্ত্রীর পাশে থেকে তাঁকে সমর্থনও করেন।

রাজ্য সভার সাংসদ সুধা মূর্তি

আর এই কর্মজীবনে তখন সবচেয়ে বড় সুযোগ তাঁর জীবনে প্রবেশ করল। চলতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন অর্থাৎ ৮ মার্চ ভারতীয় শিক্ষাবিদ এবং লেখক সুধা মূর্তিকে রাজ্যসভায় সাংসদ হিসাবে মনোনীত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ২০০৬ সালে সুধাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০২৩ সালে তিনি পান পদ্মভূষণ সম্মান। তাই সব মিলিয়ে বলা যায় সুধা দেবী শুধু পরিবার নয়, এর পাশাপাশি সমাজ, শিক্ষাজীবনেও বেশ সফল।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন