ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: আজ স্বাধীনতা দিবস। আর স্বাধীনতা দিবস মানেই লম্বা ছুটির দিন। কিন্তু এই লম্বা ছুটির দিনে বাড়িতে বসে থাকতে কার বা মন চায়? তাইতো এমন ছুটির দিন যাতে কোনোভাবেই ওয়েস্ট না হয় তার জন্য কাছে পিঠে কোনো অপূর্ব স্থানে ঘুরে আসুন। সেই কারণে আমাদের আজকের প্রতিবেদন আপনাদের জন্য বেশ কয়েকটি ভ্রমণকেন্দ্রের কথা বলবে যেখানে আপনারা একদিনেই ঘুরে চলে আসতে পারবেন।
আলিপুর জেল মিউজিয়াম
ছুটির দিনে কলকাতা থেকে বাইরে কোথাও না গিয়েও ঘুরে নিতে পারেন আলিপুর জেল মিউজিয়াম। ব্রিটিশ ভারতে নির্মিত প্রাচীন সংশোধনাগার আলিপুর সেন্ট্রাল জেল। যেটি কিনা সরকারি উদ্যোগে রূপান্তিরত হয় মিউজিয়ামে। ভারতীয় ইতিহাসের নানান টুকরো টুকরো ছবি তুলে ধরা হয়েছে এই সংগ্রহশালায়। প্রতি সন্ধ্যায় ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ শো-এর মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এখানে তুলে ধরা হয়। এই সংশোধনাগারের মধ্যেই একসময় আটক ছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু, বিধান চন্দ্র রায় থেকে শুরু করে যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত, দীনেশ গুপ্ত, রাধাচরণ পাল, প্রমোদ রঞ্জন চৌধুরীরা। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই ঐতিহাসিক হেরিটেজ এ ঘুরতে যাওয়াই যায়।
কীভাবে যাবেন?
জায়গাটি হাজরা মোড়ের কাছে। বাইরে থেকে এলে হাওড়া স্টেশনে নেমে ট্যাক্সি বা ক্যাব ভাড়া করে ডিরেক্ট পৌঁছে যাবেন এই মিউজিয়ামে। এ ছাড়া, মেট্রোও আছে।
ভাড়া
শুধু যদি মিউজিয়াম দেখতে চান তাহলে মাত্র ৩০ টাকা টিকিট কেটেই ঢুকতে পারবেন। তবে যদি লাইট ও সাউন্ড শো দেখতে চান তবে আলাদা করে ১০০ টাকার টিকিট কাটতে হবে। মিউজিয়ামের ভিতরেই ক্যাফে আছে। এ ছাড়া, কলকাতার যে কোনও রেস্তোরাঁতে ঢুঁ দিতে পারেন। বেলা ১১টা থেকেই দর্শকদের জন্য খুলে যায় সংগ্রহশালা।
রণডিহা
দামোদর নদের পাড়ে থাকা রণডিহায় লকগেট দেখতে শীতের সময়ে দিনভর ভিড় জমাতেন বহু মানুষ। পাশাপাশি, মাছ ধরতেও অনেককেই আসতে দেখা যেত। তবে এখন শুধু শীতেই নয়, বর্ষার মেজাজেও রণডিহার রূপ দেখতে অনেকেরই মন আনচান করে। কারণ সেই সময় লকগেট থেকে জল ছাড়া হয়। লকগেটের ধারেই রয়েছে গাছপালা, বাঁধানো চত্বরে বসার জায়গা। যখন আকাশ মেঘমুক্ত থাকে তখন রণডিহায় সূর্যাস্তের সময়টাও বেশ সুন্দর লাগে। শীতের দিনে এখানে পিকনিকে আসেন অনেকেই।
কীভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে পানাগড়ের উদ্দেশে যেতে হবে। সরাসরি ট্রেন না পেলে বর্ধমান গিয়ে, সেখান থেকে ট্রেন ধরে চলে যেতে পারেন পানাগড়। পানাগড় থেকে অটো বা বাসে রণডিহা। কলকাতা থেকে গাড়িতেও ডিরেক্ট রণডিহা গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
পিয়ালি দ্বীপ
সবুজে মোড়া দ্বীপগুলির মধ্যে অন্যতম হল এই পিয়ালি দ্বীপ। এখানে ছোট্ট শান্ত পিয়ালি নদী এসে মিশেছে মাতলার বুকে। আপনি পিয়ালি দ্বীপ থেকে নৌকো নিয়ে মাতলা নদীতে ঘুরে বেড়াতে পারেন। ভোরবেলা উদিত সূর্যের আভা কিংবা রাতে জ্যোৎস্না পড়ে যখন চকচক করবে পিয়ালি নদীর জল, তখন তার রূপই হয় আলাদা। নদীর ওপর দিয়ে বয়ে আসা শীতল বাতাস প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। যদি আপনি প্রকৃত পক্ষিপ্রেমী হন তাহলে আশপাশের সবুজ গাছগাছালিতে পাখিদের কার্যকলাপ সহজেই নজর কাড়বে। শুধু কি তাই? বর্ষার এই রিমঝিম মরশুমে নদীর বুকে নৌকা নিয়ে এক অভূতপূর্ব অনুভূতি অর্জন করবেন।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ থেকে সকালবেলা জয়নগরের দিকের লোকাল ট্রেন ধরে দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে পৌঁছোতে হবে। সেখান থেকে অটোতে কেল্লা। কেল্লা থেকে হাঁটা পথেই পৌঁছনো যাবে পিয়ালির অলিন্দে।