মুম্বইঃ রতন টাটা (Ratan Tata) জীবদ্দশায় এমন এমন কাজ করে গিয়েছেন, যা যুগ যুগ ধরে প্রতিটা ভারতীয় মনে রাখবেন। দেশের নামকরা শিল্পপতি হলেও, রতন টাটা কিন্তু মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানির মতো টাকার দিক থেকে ধনী ছিলেন। তবে তিনি মনের দিক থেকে অনেক ধনী ছিলেন। আর এই কারণেই রতন টাটাকে ভারতীয়রা আজীবন মনে রাখবেন। রতন টাটা প্রয়াণের আগে দেশবাসীকে এক বড় উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন। এমন উপহার আগে কোনদিনও পায়নি দেশবাসী।
আসলে রতন টাটা পোষ্য প্রেমী ছিলেন। তার নিজের একটি সারমেয় ছিল যার নাম গোয়া। আর এই গোয়াকে তিনি রাস্তা থেকে তুলে এনে সিংহাসনে বসিয়েছিলেন। তার পশুপ্রেম এতটাই ছিল যে, তিনি বেঁচে থাকতেই পশুদের জন্য একটি হাসপাতালও করে দিয়ে গিয়েছেন। তবে, যেমন তেমন নয়, একদম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।
মুম্বইতে রতন টাটার ওই প্রাণী হাসপাতালটি রয়েছে। ওই হাসপাতালটি স্মল অ্যানিম্যাল হাসপাতাল নামে পরিচিত। এ বছরের জুলাই মাস থেকে হাসপাতালটির পরিষেবা শুরু হয়েছে। শুধু হাসপাতালই নয়, এর আগে রাস্তার কুকুরদের জন্য মুম্বইয়ের বিখ্যাত তাজ হোটেলের দরজা খুলে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন রতন টাটা। মুম্বইয়ের স্মল অ্যানিম্যাল হাসপাতাল তৈরি পিছনে রয়েছে এক করুন কাহিনী, তা জানেন?
একবার টাটার এক পোষ্যের হাঁটুতে গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সময় ভারতে ভালো হাসপাতাল না থাকায়, সেই পোষ্যকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে, তার অস্ত্রোপচার ঠিকভাবে হয়েছিল না। এরপর রতন টাটা সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতে পশুদের জন্য একটি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নেন।
পশু হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও, তা সেই সময় বাস্তবায়িত হয়নি। প্রথমে জমি সংক্রান্ত সমস্যা, তারপর কোভিড মহামারীর কারণে পশু হাসপাতাল নির্মাণের কাজ থমকে যায়। এরপর ২০২৪ এর জুলাই মাসে সব বাধা অতিক্রান্ত করে সেই হাসপাতালে পশুদের চিকিৎসা শুরু হয়।
রতন টাটার ওই পশু হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা মেলে। সেখানে উন্নতমানের ডায়গনস্টিক পরিষেবা যেমন সিটি স্ক্যান, এমআরআই-রও সুবিধা রয়েছে। রয়েছে বিশেষ সার্জারির সুবিধা, ক্যানসার চিকিৎসার পরিষেবা, ফিজিওলজি, অর্থোপেডিকস। এছাড়াও অতি জরুরি ও জীবনের ঝুঁকি থাকা পশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো হয় এই হাসপাতালে।