ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ ভারতের এক ঐতিহ্যপূর্ণ রাজ্য। যাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একের পর এক নানা ঐতিহাসিক সংস্কৃতি। এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রচিত হয়েছে এক একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। যার মধ্যে অন্যতম হল হাওড়া জেলা। গঙ্গা তীরবর্তী এই জেলায় নিশ্চয়ই অনেকে ‘দাশনগর’ এর নাম শুনেছেন? যেটা কিনা অত্যন্ত জনপ্রিয় এলাকা। কিন্তু জানেন কি এই এলাকায় এমন নামকরণ হওয়ার কারণ কী ছিল? আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণটা জেনে নিন বিস্তারিত।
বিশ শতকের প্রথম দিকের এক অত্যন্ত উদ্যোগী, পরিশ্রমী এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি শিল্পপতি আলামোহন দাশ। হাওড়ার উদায়নারায়নপুরের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শহরে নিয়মিত এসে মায়ের হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রি করতেন আলামোহন দাশ। সেই মুড়ি বিক্রি নিয়ে জুটেছে নানা অবহেলা, অবজ্ঞা। অন্যের বারান্দায় বসে মুড়ি বিক্রি করার জন্য কখনও আবার জুটেছে গলাধাক্কাও। কিন্তু সেই কষ্টকে জেদ হিসেবে নিয়ে একের পর এক স্বপ্ন বুনেছিলেন নিজের চোখে।
কর্মজীবনে আলামোহন দাশ!
১৯৩০-৪০ এর দশকে এই মুড়ি বিক্রেতা একটা জুট মিল গড়ে তুলেছিলেন। তারপর একের পর এক বিভিন্ন কারখানা গড়েছিলেন। করে দিয়েছিলেন প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। সাধারণ একজন মুড়ি বিক্রেতা থেকে বিখ্যাত শিল্পপতি হয়ে উঠেছিলেন আলামোহন দাশ। তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল দেশে-বিদেশে। ভারত জুট মিল, দাশ মেশিনারি, এশিয়া ড্রাগ কোম্পানি, গ্ৰেট ইন্ডিয়ান স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি, আরতি কটন মিল সহ বহু নামী প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
নামকরণের নেপথ্যে কারণ
আলামোহন দাশ এর কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং উদ্দীপনা সমগ্র বাঙালিকে নতুনভাবে বাঁচার পথ দেখিয়েছিল। গোটা সমাজের ভীতটাই নাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর পথ অবলম্বন করেই একের পর এক যুবসমাজ নিজেদের গড়ে তুলেছে। আর তাই তাঁর নামেই একটা গোটা জনপদের নামকরণ করা হয়। হাওড়ায় গড়ে উঠেছিল তাই ‘দাশনগর’।