দেবপ্রসাদ মুখার্জিঃ কল্পনা চাওলার পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা মহাকাশচারী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামস। দেশের মহিলাদের কাছে আজ তিনি এক অনুপ্রেরণার সমান। তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও সুনীতা উইলিয়ামস একজন মার্কিন মহাকাশচারী। তিনি NASA-র মহাকাশ গবেষণায় একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে পরিচিত। এসব সত্ত্বেও সুনীতা হিন্দুধর্ম পালন করেন। ২০০৬ সালের একটি মিশনে তিনি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে গীতা নিয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে সেই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে আটকে রয়েছেন সুনীতা। যেমনটা খবর মিলেছে, ২০২৫-সালে পৃথিবীতে ফিরবেন তিনি।
সুনীতা উইলিয়ামস এখনো পর্যন্ত NASA-র একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন। এর মাধ্যমেই তিনি মহিলা মহাকাশচারী হিসেবে মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটানোর রেকর্ড করেন। পাশাপাশি, মহাকাশে হেঁটে বেড়িয়ে কাজ করার, যাকে স্পেসওয়াক বলা হয়, সেই ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি করেছেন। সুনীতার বাবা একজন ভারতীয়। তবে তাঁর মা স্লোভেনীয় বংশোদ্ভূত। আর সুনীতা হলেন বিবাহিত। কিন্তু এমন একজন বিজ্ঞানীর দাম্পত্য জীবন কেমন কাটে? আসুন আজ এই মহিলা মহাকাশচারীর ব্যক্তিগত জীবনের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সুনীতার স্বামী মাইকেলকে চিনে নিন
সুনীতা উইলিয়ামস প্রায় ২০ বছর আগে বিয়ে করেন মাইকেল যে উইলিয়ামসকে। তিনি আমেরিকার একজন ফেডারেল মার্শাল। সেই সঙ্গে তিনি একজন হেলিকপ্টার ক্যাপ্টেনও ছিলেন। এককথায়, মাইকেল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন। তিনি হেলিকপ্টার চালনা ও যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করার বিশেষজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ফেডারেল মার্শাল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এসবের পাশাপাশি হিন্দুধর্ম পালন করেন মাইকেল।
সুনীতা ও মাইকেলের দাম্পত্য জীবন কেমন?
সুনীতা এবং মাইকেল একে অপরকে অত্যন্ত সম্মান এবং সমর্থন করেন। তাঁদের দাম্পত্য জীবন বেশ সুসংহত এবং শক্তিশালী। সুনীতার মহাকাশ অভিযানের সময় মাইকেল তাঁকে সবসময় মানসিক সমর্থন করেছেন। তাঁদের পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা তাঁদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। অন্যদিকে যেহেতু, দুজনেই আকাশে ওড়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, সেই কারণে হয়তো তাঁদের কেরিয়ার কখনো সম্পর্কের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
সুনীতার জীবনের সবথেকে বড় অনুপ্রেরণা তাঁর স্বামী
সুনীতা একাধিকবার সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন যে, মাইকেল সবসময় তাঁকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সেই কারণেই হয়তো সুনীতা তাঁর মহাকাশ জীবনের সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোকেও সামলাতে সক্ষম হয়েছেন। সুনীতা মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও স্বামী মাইকেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অটুট রয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা না থাকলে তো তেমনটা সম্ভব নয়।
কন্যা সন্তান দত্তক নিতে চান সুনীতা উইলিয়ামস
ব্যক্তিগত জীবনে সন্তানলাভ না করলেও সুনীতা উইলিয়ামস তাঁর বাড়িতে একটি পোষ্যকে সন্তানের মতোই স্নেহ করেন। জ্যাক রাসেল টেরিয়ার প্রজাতির একটি কুকুর রয়েছে এই মহাকাশ বিজ্ঞানীর বাড়িতে। তাঁর পোষ্যের নাম গর্বি। তবে এক সাক্ষাৎকারে সুনীতা জানিয়েছিলেন যে এক সন্তানকে দত্তক নিতে চান তিনি। তবে আমেরিকা থেকে নয়, ভারতের গুজরাট রাজ্যের আমেদাবাদ শহর থেকে তিনি এক কন্যা সন্তানের দত্তক নিতে চান ভবিষ্যতে।