ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: হিন্দুদের মধ্যে অমাবস্যার এক ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে, কৃষ্ণপক্ষের শেষ দিনটি পরিচিত হয়ে অমাবস্যা নামে। সূর্য ও চন্দ্র একই রাশিতে যখন বিরাজিত হয় তখনই অমাবস্যার শুরু হয়। এই দিন পিতৃপুরুষদের পুজোর জন্য বিশেষ দিন। বলা হয়, অমাবস্যার দিনে পবিত্র নদীতে স্নান করে, অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে কুন্ডলীর শনির দোষ এবং কাল সর্প দোষ দূর হয়। আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক কবে পড়েছে ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তথা কৌশিকী অমাবস্যা।
কবে পালিত হতে চলেছে ২০২৪ সালের কৌশিকী অমাবস্যা?
কথিত আছে ভাদ্র মাসের শুরুতেই যে অমাবস্যা হয়, সেটাই কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত। আর এই পুজোর সঙ্গে জড়িত আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। কৌশিকী অমাবস্যার পবিত্র লগ্নে মা কালীর আরেক রূপ মা তারার বিশেষ উপাচারে পুজো করা হয়৷ জ্যোতিষ শাস্ত্র গণনা অনুযায়ী জানা গিয়েছে ২০২৪ সালে ভাদ্রমাসের কৌশিকী অমাবস্যা পড়েছে ২ সেপ্টেম্বর, সোমবার। এই অমাবস্যার তিথি শুরু হবে ২ সেপ্টেম্বর, সকাল ০৫:২১ মিনিটে এবং ভাদ্রপদ অমাবস্যার তিথি শেষ হবে পরের দিন অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর, সকাল ০৭:২৪ মিনিটে।
ব্রহ্ম মুহুর্ত থাকবে সকাল ০৪:৩৮ মিনিট থেকে ০৫:২৪ মিনিট পর্যন্ত। পুজোর শুভ মুহুর্ত থাকবে সকাল ০৬:০৯ মিনিট থেকে ০৭:৪৪ মিনিট পর্যন্ত। এই বছর ভাদ্র মাসের অমাবস্যা পড়েছে সোমবার, তাই এই অমাবস্যাকে বলা হচ্ছে সোমবতী অমাবস্যা। অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয় এই সোমবতী অমাবস্যাকে।
সাধক বামাক্ষ্যাপার সিদ্ধিলাভ!
সোমবতী অমাবস্যা উপলক্ষে ব্রহ্ম মুহূর্তে পবিত্র নদীতে স্নান ও তর্পণ নিবেদন করলে পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এই দিনে বিবাহিত মহিলারা তাদের স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করে উপবাস পালন করেন। এটি সন্তানের জীবনে সুখ নিয়ে আসে। ভাদ্র অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপুরুষের নামে শ্রাদ্ধ ও তর্পণ করলে পরিবারে সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। জানা যায় ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশশ্মানে শ্বেত শিমূল বৃক্ষের তলায় বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। আর এই দিনেই তারা মায়ের আবির্ভাব পান বামাক্ষ্যাপা। অন্যদিকে এই তিথিতেই আবার কৌশিকী রূপে শুম্ভ নিশুম্ভ নামে অসুরদের দমন করেন মা তারা।
প্রসঙ্গত, কৌশিকী অমাবস্যাকে ঘিরে তারাপীঠে পালিত হয় বিশেষ পুজো। তারাপীঠে সেদিন বিশেষ তন্ত্রসাধনার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে, তন্ত্র সাধনার এই রাতকে ‘তারা রাত’ ও বলা হয়ে থাকে। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা খুলে যায়। সেই সময়ই সাধনায় অনেকেই বসেন। ফলে কৌশিকী অমাবস্যার তিথি সকলের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।