ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম হল ভারতের রেল পরিষেবা। প্রতিদিন ট্রেনে প্রায় লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী যাতায়াত করে। তাইতো দূরপাল্লার ট্রেনযাত্রা অনেকের কাছেই বেশ রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে। শুধু দূরপাল্লা নয় ভ্রমণের স্বাদ পাওয়া যায় লোকাল ট্রেনেও। কিন্তু ভ্রমণ করলেও আমরা অনেকেই ভারতের স্টেশনগুলি সম্পর্কে অনেক কিছু জানিনা। কম বেশি সকলের কাছে জানা আছে যে ভারতের দীর্ঘতম রেলওয়ে স্টেশন হল গোরখপুর। কিন্তু জানেন কি দেশের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন কোনটি? না জানলে আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণটা জেনে নিন।
দেশের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন কোনটি?
আসলে দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশনটি অন্য কোনো রাজ্যে নয়, রয়েছে বাংলার বুকেই। অর্থাৎ দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেল স্টেশন হল হাওড়া স্টেশন। যদিও সেই তালিকায় নাম উঠে আসে শিয়ালদারও। কিন্তু শুধুমাত্র বড় রেল স্টেশনের হিসেব করলে শিয়ালদহকে ছাপিয়ে এগিয়ে রয়েছে হাওড়া জংশন। এই স্টেশনে রয়েছে ২৩ টি প্ল্যাটফর্ম। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই স্টেশনটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে প্ল্যাটফর্ম পার হওয়ার জন্য যাত্রীদের ব্রিজ দিয়ে যেতে হয় না।
স্টেশনের নানা ঐতিহ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য
সূত্রের খবর, হাওড়া রেলওয়ে স্টেশনের নকশা প্রথম তৈরি করেছিলেন করেছিলেন ব্রিটিশ স্থপতি হ্যালসি রিকার্ডো। ১৮৫৪ সালে ১৫ আগস্ট এই রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো ট্রেন চলাচল করে। প্রথমবার হাওড়া ও হুগলির মধ্যে ট্রেন চলাচল হয়েছিল। এরপর হাওড়া রেল স্টেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার ট্রেন চলাচল করে। এখানে ২৬ টি ট্র্যাক অর্থাৎ রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। হাওড়া স্টেশন থেকে যেমন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে, তেমনই লোকাল ট্রেনও চলে প্রচুর পরিমাণে। রাজধানী, শতাব্দী, বন্দে ভারতের মতো প্রিমিয়াম মানের ট্রেন এই হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। প্রতিদিন এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রায় ১০.৮ লক্ষেরও বেশি রেল যাত্রী এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে।
প্রসঙ্গত, হাওড়া জংশন ভারতের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম রেল স্টেশনগুলির মধ্যে একটি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বারা নির্মিত এই স্টেশন আজ এত বছর পরেও ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই রেলস্টেশনটি স্বমহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। একসময় এই স্টেশন এর যাত্রাপথ ছিল বিপ্লবীদের কেন্দ্রস্থল। কারণ স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তাঁদের সভা-সমাবেশ ও যাবতীয় পরিকল্পনা এখানেই প্রস্তুত করা হত। আর এটি ভারতের একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন, যার সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি রেল যোগাযোগ রয়েছে। মৈত্রী এক্সপ্রেস, কলকাতা এবং ঢাকার মধ্যে চলাচল করে উভয় শহরকে সংযুক্ত করে রেখেছে।
তবে বাদ যায়নি বাকি রাজ্যগুলিও। মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস দেশের তৃতীয় রেলওয়ে স্টেশন যেখানে ১৮টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এর পরে, রাজধানী দিল্লির নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনটি ১৬টি প্ল্যাটফর্ম সহ ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রেলওয়ে স্টেশন। চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে পাঁচ নম্বরে। এই স্টেশনে মোট প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা ১৫ টি।