ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সাফল্য পেতে গেলে প্রয়োজন একাগ্রতা আর কঠিন পরিশ্রম। জীবনে চলার পথে প্রত্যেককেই নানান রকম বাঁধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তবে নিজের লক্ষ্যকে যদি স্থির রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে আর কোনো বাঁধাই থাকে না। তাই প্রতিযোগিতা যতই পর্বত সমান উঁচু হোক না কেন, সেখানে সাফল্য পেতে যে পরিশ্রমের শিখরের পৌঁছতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তেমনই দারিদ্রতাকে পিছনে ফেলে আজ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে মুর্শিদাবাদের রাহুল শেখ সকলকে নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে দিয়েছে।
আর্থিক অনটনে রাহুলের পরিবার
জঙ্গিপুরের প্রত্যন্ত এলাকা মঙ্গলজোন। সেখানকার বাসিন্দা রাহুল শেখ। বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। আর মা গৃহবধূ। অভাবের সংসারে অধিক অর্থ জোগাড় করার আশায় ঘরে বসেন বাঁধেন বিড়ি। রাহুল এক নয়, তার আছে তিন ভাই ও এক বোন। অত্যন্ত কষ্টের সংসার চলে তাঁদের। বহু করতে টাকা জমিয়ে এবং ধার করে বোনের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোটো থেকেই বেশ মেধাবী ছাত্র ছিলেন রাহুল শেখ। প্রতিটি ক্লাসে তাঁর রেজাল্ট ছিল নজরকাড়া। কিন্তু অর্থের অভাবে পড়াশোনায় বাঁধা চলে এল তাঁর।
নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অটল রাহুল
কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে টলাতে পারেনি। সঙ্গে ছিল বড় দাদার আশির্বাদ এবং সহায়তা। প্রথম দিকে রাহুলের পড়াশোনার পিছনে খরচ জুগিয়েছিল তাঁর মা। তারপরে রাহুলের পড়াশোনার জন্য আর্থিক কৃতিত্ব কাঁধে তুলে নেন পুলিশ অফিসার বড় দাদা সাহিবুল শেখ। তাঁর চাকরি পাওয়ার পরেই সচ্ছলতা এসেছে তাদের সংসারে। এরপর রাহুল জঙ্গিপুর মহকুমার বারালা রাম দাস সেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। তারপর B.A L.L.B ডিগ্রী অর্জন করার জন্য ভর্তি হন আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৮ সালে সেখান থেকে পাস আউট হয়ে L.L.MZ এর জন্য ভর্তি হয় পাঞ্জাব সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। PHD সম্পন্ন করে অবশেষে জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন তিনি। আর সেই পরীক্ষাতেই ভাগ্য সে দিল তাঁর। ১২ নম্বর স্থানে উত্তীর্ণ হয়ে জায়গা করে নিলেন রাহুল শেখ।
আরও পড়ুনঃ শত্রুতা নয়, মলদ্বীপের পাশেই দাঁড়াল ভারত! লাভবান হতে চলেছে দুই দেশই
রাহুলের এই সাফল্যে খুশি বাবা মা সহ ভাই, বোন এবং দাদা। এমনকি গর্বিত গোটা মুর্শিদাবাদবাসী। রাহুলের কথায়, আইন নিয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন তাঁর প্রথম থেকেই ছিল। তাইতো শত বাঁধা থাকা সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে গেছিলাম। পাশে তাঁর পুলিশ অফিসার বড়দা, মা, বাবা না থাকলে সেই সাফল্য হয়ত আজ দেখতে পারতেন না তিনি।