ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: ঘড়ির কাটা ধরে ছোট পর্দার দর্শকেরা টিভির পর্দায় তাঁদের প্রিয় সিরিয়াল দেখতে বসে পড়েন। সহজ কথায় বলতে গেলে বাঙালি দর্শক কিন্তু, প্রকৃত সিরিয়াল প্রেমী। তবে যখন কোনও ধারাবাহিক শেষ হওয়ার খবর আসে বা শেষ এপিসোডের সম্প্রচার হওয়ার দিন চলে আসে তখনই মনটাও বেশ ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি বাংলা সিরিয়ালের TRP এর লড়াইয়ে ধারাবাহিকের মতি গতি বেশ পরিবর্তন হয়েছে।
বর্তমানে এমন অনেক বাংলা ধারাবাহিক রয়েছে, যেগুলি দর্শকদের কাছে বেশ সুপারহিট হওয়ায় সেগুলি বিভিন্ন ভাষায় সংস্করণ করা হয়ে থাকে। সম্প্রতি স্টার জলসার অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গীতা এলএলবি’ এও এইবার সেই একই পথে হাঁটছে। প্রতি সপ্তাহে TRP তালিকায় নজর রাখলে দেখা যায় প্রথম ১০ এর মধ্যে এই ধারাবাহিক অন্যতম জায়গা করে নিয়েছে। তাই এবার এই ধারাবাহিকই হিন্দি সংস্করণে নির্মিত হতে চলেছে। ফলত প্রথমবার হিন্দি ধারাবাহিকে পা রাখতে চলেছেন অভিনেত্রী শ্রীতমা দে। শুধু তাই নয় থাকছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, মেঘনা হালদার, অসীম চৌধুরী-সহ অনেকেই। এমনকি এই ধারাবাহিকে দেখা যাবে শকুন্তলা বড়ুয়াকেও। কিন্তু সম্প্রতি এই হিন্দি ধারাবাহিককে ঘিরে তৈরি হল এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি।
আচমকাই শুটিং বন্ধ এই ধারাবাহিকের!
সূত্রের খবর, ‘গীতা এলএলবি’-র হিন্দি সংস্করণের শুটিং শুরু হয়েছিল গতকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে। অর্ধেক শুটিংয়ের পরে আচমকা বন্ধ হয়ে যায় কাজ। ধারাবাহিকের প্রযোজক ও পরিচালক স্নেহাশিসের অভিযোগ, দুপুরের খাওয়া শেষ হতেই কোনও কিছু না জানিয়ে শুটিং ফ্লোর ছেড়ে চলে যান কলাকুশলীরা। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব পরিচালক। হঠাৎ করে কেন শুটিং বন্ধ হল তা সরাসরি জানতে এবার টলিউড ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ‘যে চ্যানেলের হয়ে স্নেহাশিস শুটিং শুরু করেছিলেন তাদের কিছু নিয়মবিধি মানার নির্দেশ দিয়েছিল ফেডারেশন। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও মতামত জানায়নি। সদুত্তর না পাওয়া পর্যন্ত নতুন ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ থাকবে। নিয়মিত ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে অবশ্য এই নির্দেশ লাগু হচ্ছে না।’
আরও পড়ুনঃ চাকরি বাতিলের পর শিক্ষকদের নিয়ে ফের বড় রায় হাইকোর্টের, কড়া নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে
তিনি আরও বলেন, ‘ইদানীং সকল চ্যানেল পুরনো-নতুন ধারাবাহিক OTT প্ল্যাটফর্মে দেখিয়ে দিচ্ছে। এতে লাভবান হওয়া যাচ্ছে বটে কিন্তু টেলিপাড়া ক্রমশ ক্ষতির মুখে পড়ছে। তাই সেটা বন্ধ করার নির্দেশ জানিয়ে ফেডারেশন বাংলা চ্যানেলগুলোকে চিঠি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। অন্যান্য চ্যানেল ফেডারেশনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চলছে । ব্যতিক্রম স্নেহাশিস যে চ্যানেলের হয়ে কাজ করছে সেটি। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যদি নতুন হিন্দি ধারাবাহিকটি OTT তে দেখাবেন না এই মর্মে লিখিত ভাবে জানান তাহলে রাতারাতি শুটিং শুরুর অনুমতি দেওয়া হবে।’
কী বলছেন পরিচালক?
গোটা ব্যাপারে অত্যন্ত বিরক্ত পরিচালক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘কাজে যাতে কোনও গোলযোগ না থাকে সে জন্য গত তিন মাস ধরে সবাইকে নিয়ে মহড়া দিয়েছি। যদিও কাজ শুরুর আগে মুম্বইয়ে শুটিং করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন জাতীয় স্তরের চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমি বলেছিলাম, কলকাতায় থেকেও বড় মাপের কাজ করা সম্ভব। আমি করে দেখিয়ে দেব। কিন্তু এই গোটা ঘটনায় মুম্বইয়ের কাছে মুখ পুড়ল আমার।’