ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: ছোটবেলায় কম বেশি সকলের পড়াশোনায় গতানুগতিক একই থাকে। ধাপে ধাপে নার্সারি থেকে শুরু করে উচ্চ বিদ্যালয়। এরপর দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়েই উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজ, মহা বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা। সেখানে একটা ডিগ্রি আয়ত্ত করাই পড়ুয়াদের কাছে বেশ চাপের বিষয় হয়ে ওঠে। এরপর চাকরি কিংবা অন্য কোনও কর্মক্ষেত্রে জীবনের অর্ধেক সময় পাড় হয়ে যায় সকলের। কিন্তু জানেন কি ভারতে এমন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি রয়েছেন, যিনি পেয়েছিলেন ২০ টি আলাদা আলাদা বিষয়ে ডিগ্রি?
না, শুধু ২০ টি আলাদা বিষয়ে ডিগ্রিই অর্জন করেননি এছাড়াও তিনি পড়াশোনা করেছিলেন ৪২ টি ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে শ্রীকান্ত জিচকারকে নিয়েই। যিনি কিনা ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি। বয়স যখন তাঁর মাত্র ২৫, তখনই তাঁর মুকুটে ছিল ১৪ টি ডিগ্রি। এমনকি সেই সময় ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডস’ এর তালিকায় উঠেছিল শ্রীকান্ত জিচকার এর নাম। থলিতে ছিল বেশ কয়েকটি স্বর্ণপদক। একনজরে জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে।
শ্রীকান্ত জিচকার এর শিক্ষাজীবন
নাগপুরে এক মারাঠা পরিবারে জন্ম হয়েছিল শ্রীকান্ত জিচকার এর। ছোট থেকেই বেশ মেধাবী ছিলেন তিনি। স্কুল জীবনের পড়াশোনার পর তিনি নাগপুরের এক মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রথমে MBBS এবং পরে MD করেন। সেখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তাঁর মন চায় LAW নিয়ে পড়াশোনা করার। তবে এখানেই থেমে থাকেন না। এরপর একে একে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, সাংবাদিকতা ইত্যাদি বিষয়ে স্নাতক হন তিনি। পাশাপাশি সংস্কৃতিতে ডি-লিট উপাধিও পান শ্রীকান্ত। মাস্টার্স ডিগ্রি অথবা স্নাতকোত্তর অর্জন করেন সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইংরেজি, সাহিত্য, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ববিদ্যাতেও।
এরপর মাত্র ২৪ বছর বয়সে শ্রীকান্ত IPS পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সেই পদে চাকরি করেছিলেন টানা ২ বছর। এর পর তিনি ভারতের সবচেয়ে কঠিন সরকারি চাকরি IAS-এ বসেন। সেই পরীক্ষাতেও তিনি দারুণ সফলতা অর্জন করেন। যদিও সেই চাকরি চার মাস গড়াতে না গড়াতেই ছেড়ে দেন তিনি। এরপর মন যায় তাঁর রাজনীতিতে।
রাজনীতিতে শ্রীকান্ত জিচকার
দেশের সর্বকনিষ্ট বিধায়ক হিসেবে শ্রীকান্ত জিচকার এর নাম নির্বাচিত হয়। এরপর তিনি রাজ্যের মন্ত্রী, রাজ্যসভার সদস্য এবং মহারাষ্ট্র আইন পরিষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাচ্চাদের শিক্ষার অগ্রগতির জন্য শ্রীকান্ত নাগপুরে একটি স্কুল খোলেন। যেই বিদ্যালয় ভারতের অন্যতম বৃহৎ লাইব্রেরি রয়েছে। ধর্ম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য দেশব্যাপী ভ্রমণ করেছেন তিনি।ইউনেস্কোতেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন শ্রীকান্ত। কিন্তু ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক এই মহান ব্যক্তি ২০০৪ সালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্য হয়। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় নেমে আসে এক ঘোর অন্ধকার।