পশু বা পাখি থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মত খবর হামেশাই কাগজের শিরোনামে উঠে আসে। যা অত্যন্ত ভয়ংকর। গরমের এই আবহে হাঁস, মুরগীদের বার্ড ফ্লু এবং সোয়াইন ফ্লু এর খবর প্রায়শই শোনা যায়। আর এই রোগ মানব শরীরে প্রবেশ করলে তার পরিণাম হয় মারাত্মক। তবে সম্প্রতি এক রিপোর্টে জনপ্রিয় সংস্থার বিরুদ্ধে উঠে এসেছে এক ভয়ংকর অভিযোগ। যা শুনলে শিউরে উঠবেন আপনিও।
পোল্ট্রি উৎপাদনের গতি বাড়াতে অনেকেই হাঁস ও মুরগির ছানাদের নানা ওষধি দ্রব্য দিয়ে থাকে। যা একদিক থেকে ভালো হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত ভয়ংকর হয়ে ওঠে। এমনই এক সংস্থার বিরুদ্ধে এবার উঠে এল সেই অভিযোগ। জানা গিয়েছে সেই সংস্থা এমন কয়েকটি দ্রব্য বাজারজাত করছে, যা মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। অর্থাৎ তারা এমন কিছু ওষধি দ্রব্য উৎপাদন করছে যা পশুদের ক্ষেত্রে সঠিক হলেও মানুষের জন্য ভয়ংকর।
ভয়ংকর অভিযোগ এই সংস্থার বিরুদ্ধে
জানা গিয়েছে অভিযোগকারী সেই কোম্পানিটির নাম ‘Venky’s’। এটি হাঁস ও মুরগির বাচ্চাদের জন্য খাদ্য এবং তাদের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য পণ্য তৈরি করে। এই ধরনের পণ্য বৃদ্ধি প্রবর্তক হয় অর্থাৎ ছানাগুলো এই ওষধি দ্রব্যের মাধ্যমে দ্রুত বড় হয়ে ওঠে। পাশাপাশি ভেঙ্কি’স পশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকও উৎপাদন করছে। এদিকে গবেষণায় সেই অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে উঠে এসেছে এক বিস্ফোরক তথ্য। যেখানে বলা হয়েছে ছানাকে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে তা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
মুরগির মাংসে মানবদেহে ক্ষতি
সূত্রের খবর ছানা বৃদ্ধির গতি বাড়াতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ এবং আমেরিকায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে। এদিকে দক্ষিণ তেলেঙ্গানার অন্তত দুটি পোল্ট্রি ফার্মে এই ধরনের ওষুধের ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবহারের জন্য ছিল যা Venky’s এর ওয়েবসাইট দ্বারা সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বাচ্চাদের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বা প্রতিরোধমূলক ব্যবহারের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে। কারণ এই ওষুধগুলি প্রয়োগের ফলে সেই ওষুধগুলির প্রভাবকে কমিয়ে দিতে পারে যা মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরে দেওয়া হয়। এছাড়াও এই ওষুধের প্রয়োগে শরীরে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের মত রোগও বৃদ্ধি পায়।
এর আগে 2018 সালে, Venky’s মুরগির ছানাদের বৃদ্ধির জন্য কলিস্টিনব্যবহার করেছিল। যাতে তাদের বিকাশ দ্রুত ঘটতে পারে। কিন্তু একজন সুস্থ মানুষের কাছে সেই কলিস্টিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল মৃত্যু সমান। তাই এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ভারত সরকার তড়িঘড়ি সেটি নিষিদ্ধ করে দেয়।প্রসঙ্গত, প্রতি বছর মুরগির মাংস খাওয়ার ফলে এই কারণে অনেক নতুন রোগ দেখা দেয়। তাই দিন দিন মুরগির মাংসের মত হাই প্রোটিন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।তাই মুরগির খামারে অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের বিষয়ে সরকারকে আরও সচেতন হতে হবে। যাতে এর সঙ্গে যুক্ত ঝুঁকি কমানো যায়।