ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গোটা দেশের চোখ ছিল প্যারিসের দিকে। কারণ হকিতে ভারতীয় দল ব্রোঞ্জ জেতার পর ভারতীয়দের সকলেই ভেবেছিলেন সোনা পাবেন জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া। কিন্তু সেই স্বপ্নে এবার জল ঢালল পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রোয়ার আরশাদ নদিম। ৯২.৯৭ মিটার থ্রোতে সোনা জিতে দেশকে উপহার দিলেন তিনি। পরপর তিনটি ফাউল থ্রো করে প্যারিস অলিম্পিকে রুপো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল বেজিং অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নকে। আর এই আবহেই প্রশ্ন উঠছে তাঁর ট্রেনিংয়ের জন্য কোনও কসুর করেনি ভারত সরকার। তাহলে কেন সোনা ফসকাল নীরজের হাত থেকে।
কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার!
নীরজের অনুশীলনের পিছনে খরচ করতে ভারত সরকার কোনও কার্পণ্য করেনি। স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে টোকিয়োতে নীরজ যে পারফরম্যান্স করেছিল তার ভিত্তিতে প্যারিসে খেলার জন্য পরের তিন বছরের ‘টার্গেট অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম’-এর আওতায় ৩,১২,০৪,৯৯ টাকা খরচ করা হয়েছে নীরজের জন্য। পাশাপাশি অ্যানুয়াল ক্যালেন্ডার ফর ট্রেনিং অ্যান্ড কম্পিটিশন’- এর আওতায় নীরজের জন্য খরচ করা হয়েছে ২,৬০,১৭,৩৫৮ টাকা। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে মোট ৫,৭২,২১,৪৫৭ টাকা খরচ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যা প্রায় ৬ কোটি টাকার সমান।
অনুশীলনের জন্য বিদেশ ভ্রমণ
এছাড়াও গত তিন বছরে সরকারি খরচে ছয়বার বিদেশে অনুশীলন করতে গিয়েছেন নীরজ চোপড়া। তাঁর জন্য কোচ, ফিজিয়োর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ৯০ দিন আমেরিকায় অনুশীলন করেছেন নীরজ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কোচ ও ফিজিয়ো। সেখানেই নিচ্ছিলেন এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি। এরপর ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও কয়েক বার বিদেশে প্রস্তুতি সেরেছেন নীরজ। ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮৫ দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুশীলন করেন নীরজ।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে কত নম্বর, কত সেনা আছে বাংলাদেশের? ভারতের তুলনায় কতটা শক্তিশালী, জানুন
চলতি বছর অলিম্পিক্সের আগে আরও দু’বার বিদেশে শিবির করেন তিনি। ৮ মার্চ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত মোট ৭৯ দিন তুরস্কে ছিলেন তিনি। এবং অলিম্পিক্সের ঠিক আগে ২৯ মে থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ৬১ দিন ধরে ফিনল্যান্ড, জার্মানি ও তুরক্সে ট্রেনিং করেন নীরজ। কিন্তু এত কিছুর পরেও প্যারিসে রূপো জেতায় বেশ মন খারাপ গোটা ভারতের। এদিকে আরশাদ নদিম এর পছন্দের জ্যাভলিন কেনার খরচটা পর্যন্ত তাঁর দেশ দিতে পারেনি৷ গোটা গ্রাম নিজেদের ঘরের ছেলের জন্য একটু একটু করে টাকা জমিয়েছিল, আর আজ তিনি বিশ্বমঞ্চের সেরা লড়াইতে দেশকে সোনা এনে দিলেন। আনন্দে আপ্লুত গোটা গ্রাম।