একটা সময় মনে করা হত পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান বাবর আজম অতীতের অনেক কিংবদন্তির রেকর্ড ভেঙে দেবেন। যেভাবে ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে তাঁর ব্যাট জ্বলে উঠত, তাঁর প্রেক্ষিতে পাক দলের এক ‘লিভিং লেজেন্ড’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন মাঝখানে। কিন্তু বাবর আজমের ব্যাট যেন এখন রান করতেই ভুলে গেছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অফ-ফরম এবার নির্বাচকদের ভাবাচ্ছে। কারণ এতে দলের মিডল-অর্ডার মজবুত হচ্ছে না মোটেও।
সাম্প্রতিক সময়ের ক্রিকেট পরিসংখ্যান বলছে, ৬১৬ দিন আগে টেস্টে শেষবার হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বাবর আজম। অর্থাৎ, গত ৬১৬ দিন ধরে তিনি টেস্টে ৫০ রানের গন্ডি পেরোতেই পারেননি। বাবরের এই খারাপ ফর্মের ধারা গত আটটি টেস্ট ম্যাচ ধরে চলেছে। গত এই টেস্ট ম্যাচগুলিতে তাঁর সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান ছিল মাত্র ৪১। আর সেই কারণেই এবার বাবরকে নিয়ে গভীর চিন্তায় পাক ক্রিকেট বোর্ড।
বাংলাদেশ সিরিজেও ব্যর্থ বাবর আজম
বাংলাদেশের কাছে প্রথম টেস্টে লজ্জাজনক ভাবে হেরেছে পাকিস্তান। সিরিজের শুরুতেই ১০ উইকেটে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর এই হারের নেপথ্যে বাবরের ব্যাটিং ব্যর্থতা অনেকাংশে দায়ী। এই সিরিজের দুটি টেস্টের চারটি ইনিংসে বাবর মোট ৬৪ রান করেছেন। যার মধ্যে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল মাত্র ৩১। এই সিরিজে তিনি দ্রুতগতির পেস বিরুদ্ধে বেশ কষ্টে পড়েছেন এবং সহজ ক্যাচ দিয়ে বারবার আউট হয়েছেন। তার এমন অফ ফর্ম পাকিস্তান দলকে বিপদের মুখে ফেলেছে দ্বিতীয় টেস্টেও।
বিশেষজ্ঞরা চাইছেন বাবর বিশ্রাম নিক
বাবর আজমের এই খারাপ ফর্ম প্রসঙ্গে নিদান দিতে গিয়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে বাবর এইসব পরামর্শ আপাতত মানতে নারাজ। তিনি চাইছেন খেলে যেতে। কারণ বাবর বিশ্বাস করেন যে, একদিন ফের তাঁর ব্যাট থেকে রানের ফুলঝুরি উঠবে। আর সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে পাক ক্রিকেট বোর্ড এবং সমর্থকরা।
বাবর আজমের টেস্ট কেরিয়ার
বাবর আজম, পাকিস্তানের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভূত হন। তাঁর টেস্ট অভিষেক হয় ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি সিরিজে। কেরিয়ারের শুরু থেকেই তাঁর ব্যাটিং স্কিল নজর কাড়েন। ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে তিনি ধারাবাহিকভাবে রান করে দলে নিজের স্থান পাকা করেন। তবে ২০২৩ সালের পর থেকে তার টেস্ট ব্যাটিং এভারেজ নীচে নামতে শুরু করে। ২০২৪ সালের মধ্যে টানা ১৬ টি ইনিংসে একটি হাফ-সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। এই সময়ের মধ্যে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪১।