দেবপ্রসাদ মুখার্জী: একটা সময় এশিয়ান হকির মঞ্চে ভারত ও পাকিস্তান ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ। যেভাবে এখন দুই দেশের বাইশ গজের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে ক্রিকেট বিশ্ব, সেভাবেই বিগত সময়ে ভারত-পাকিস্তান হকি ম্যাচ উত্তেজনাপূর্ণভাবেই আয়োজিত হত। পাকিস্তানের সেই গরিমা অনেকটাই ফিকে হয়েছে এখন। তবে পাকিস্তান হকি দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিতে ব্রোঞ্জ জিতেছে পাক দল। তবে এর পরিবর্তে তাঁরা যে পুরস্কার পেল, তা যথেষ্ট নগন্য।
পাকিস্তান হকির গৌরবময় অতীতের সাথে তুলনা করলে বর্তমান পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ১৯৭১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে ৪ বার বিশ্বকাপ জয়ী এবং একাধিকবার অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাকিস্তান দল আজকের দিনে আন্তর্জাতিক হকি প্রতিযোগিতায় বিশেষ সাফল্য অর্জন করতে পারছে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান দল একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের যোগ্যতাই অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এবার কিছুটা সাফল্যের মুখ দেখলো দল।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকি, ২০২৪-এ পাকিস্তানের সাফল্য
পাক দেশের হকির নিম্নগামী পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২৪ সালের এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান দলের তৃতীয় স্থান অর্জন কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। সেমিফাইনালে চিনের কাছে পরাজিত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-২ গোলে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করে পাকিস্তান দল। আম্মাদ বাটের ৫ গোলের সাহায্যে এই ম্যাচে পাক দল ভালোই লড়াই করেছে। শেষমেষ ব্রোঞ্জ এসেছে পাকিস্তানের ঝুলিতে।
ব্রোঞ্জ পেয়েও নগণ্য পুরস্কার পেল পাকিস্তান দল
পাকিস্তান হকি ফেডারেশন দলের এই পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এবং খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে ১০০ ডলার অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক মানদণ্ডে এ পুরস্কারের মূল্য ২৮,০০০ পাকিস্তানি রুপি, এবং ভারতীয় মূল্যে ৮,৩০০ টাকা। এই পুরস্কার আন্তর্জাতিক বা বড় মাপের ক্রীড়া পুরস্কারের সাথে তুলনা করলে খুবই নগণ্য। তবে, পাকিস্তান হকির বর্তমান আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে এটিকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উদীয়মান সুপারস্টার খুঁজে পেল পাকিস্তান
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিতে বিশেষভাবে নজর কাড়েন ১৯ বছর বয়সী পাকিস্তানী খেলোয়াড় শাহিদ হান্নান। এই প্রতিযোগিতায় তিনি ছয়টি গোল করেছেন, যার মধ্যে পাঁচটি ছিল ফিল্ড গোল। তাঁর স্টিক থেকে দলের ১৮টি গোলের এক-তৃতীয়াংশই এসেছে, যা পাকিস্তান হকির নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড় হিসেবে তাঁকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা দিচ্ছে। পাকিস্তান হকির অনুরাগীরা তাঁকে আগামী তারকা হিসেবে চিহ্নিত করছেন।