ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: বিজ্ঞানের ইতিহাসে ভারতের মুকুটে খন্ডিত হল আরও এক রত্ন। ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবসের পরেরদিন অর্থাৎ আজ, শুক্রবার আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট-৮ বা ইওএস-৮ (EOS-8) উৎক্ষেপণ করল ISRO। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিল এই রকেটের ‘স্মল স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল-03’ বা ‘SSLV-D3’। কারণ, এটিই হল ISRO-র তৈরি সবথেকে ছোট রকেট। গতকাল অর্থাৎ ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালেই এই রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে উৎক্ষেপণ করা হয়নি। তাই আজ অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের প্রথম লঞ্চ প্যাড থেকে, সকাল ৯টা বেজে ১৯ মিনিটে সফলভাবে যাত্রা করে রকেটটি।
SSLV-এর তৃতীয় উৎক্ষেপণ!
জানা গিয়েছে, ৩৪-মিটার লম্বা এই রকেটটি ৫০০ কেজি ওজন পর্যন্ত ছোট উপগ্রহগুলি বহন করতে পারে। অর্থাৎ ইসরোর বিজ্ঞানরা ছোট আকারের স্যাটেলাইটগুলিকে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপন করার জন্যই এই রকেটটির নকশা তৈরি করেছে। আজ সেই রকেটটির তিনটি মূল পেলোড নিয়ে উড়ল। এই তিনটি পেলোড হল – ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল ইনফ্রারেড পেলোড, গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম-রিফ্লেক্টোমেট্রি পেলোড এবং এসআইসি ইউভি ডসিমিটার। এই ছোট আকারের স্যাটেলাইটগুলি সাধারণত বিপর্যয় পর্যবেক্ষণ, পরিবেশগত নজরদারির মতো কাজে লাগানো হয়।
উন্নত মানের পেলোড ব্যবহার করা হয়েছে
এছাড়াও জানা গিয়েছে এসএসএলভি-ডি৩-তে যে আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইটটি রয়েছে, তা তৈরি করা হয়েছে একটি মাইক্রোস্যাটেলাইট বা আইএমএস-১ বাসে। যার মিশন লাইফ এক বছরের। অর্থাৎ মহাকাশে এটি ১ বছরের জন্য থাকবে। ১৭৫.৫ কেজি ওজনের এই স্যাটেলাইটটি প্রায় ৪২০ ওয়াট শক্তি উৎপাদন করতে পারে। যে পেলোডগুলি রয়েছে স্যাটেলাইটটিতে, সেগুলি হল ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল ইনফ্রারেড পেলোড (EOIR), গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম রিফ্লেকটোমেট্রি পেলোড (GNSS-R) এবং SiC UV ডসিমিটার। এগুলি আসন্ন গগনযান মিশনে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও এতে EOIR ব্যবহার করা হচ্ছে যা দিনে ও রাতে মধ্য ও দীর্ঘ তরঙ্গের ইনফ্রারেড ছবি তুলবে।
এবং সেই ছবিগুলির মাধ্যমে দুর্যোগ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যাবে। মাটির আর্দ্রতা এবং বন্যা শনাক্ত করা হবে। এবং সেখানে অতিবেগুনি বিকিরণ SiC UV ডসিমিটার দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। যা গগনযান মিশনে সাহায্য করবে। এছাড়াও এই স্যাটেলাইট আরও অনেক প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে ইন্টিগ্রেটেড এভিওনিক্স সিস্টেমের মতো। এটির ধারণক্ষমতা ৪০০ জিবি ডেটা স্টোরেজ
প্রসঙ্গত, আজকের SSLV-D3-এর এই উৎক্ষেপণের পর, SSLV একটি সম্পূর্ণ অপারেশনাল রকেটের মর্যাদা পেয়েছে। এর আগে এই রকেটের দুটি উড়ান উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। SSLV-D1-এর প্রথম ফ্লাইট ৭ আগস্ট ২০২২-এ হয়েছিল। পরবর্তী ফ্লাইট অর্থাৎ SSLV-D2 ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে হয়েছিল। যেখানে তিনটি স্যাটেলাইট পাঠানো হয়। সেগুলি হল EOS-07, Janus-1 এবং AzaadiSAT-2। এই রকেট বানাতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।