ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত মাসে ৯ তারিখ আরজি কর কাণ্ডের ঘটনা গোটা রাজ্যের প্রশাসন ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তিলোত্তমার বিচারে গোটা দেশ প্রতিবাদের ঝাণ্ডা তুলে ধরেছে। দফায় দফায় অবস্থান বিক্ষোভ, মিটিং মিছিল এবং রাত দখলের লড়াইয়ে নেমেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জুনিয়র ডাক্তাররা। তার সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়েছে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। কিন্তু এই আবহে রাজ্যে একের পর এক শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠে আসছে। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরে রামনগর দ্বিতীয় বর্ষের এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল দুই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতার বিরুদ্ধে!
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, নির্যাতিতা রামনগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। চলতি বছর গত ৩১ জানুয়ারি বাড়ির অমতে তিনি এক যুবককে বিয়ে করেন। তাঁরা কলেজের সামনে একটি মেসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কলেজের ছাত্র নেতারা সহযোগিতা করেন এতে। ঘটনাটি ঘটে গত ২০ জুলাই রাতে। নির্যাতিতার অভিযোগ, রাতে কলেজের মেসে একটি মদের আসর বসানো হয়েছিল। শতদলের নেতৃত্বে কয়েকজন ‘দাদা’ রাত ১০টা নাগাদ মেসের ঘরে এসে খাওয়াদাওয়ার কথা বলে। পরে তাঁদেরও মদ্যপান করানো হয় বলে দাবি। মদ খাইয়ে ওই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর স্বামীকে বেহুঁশ করে অভিযুক্তরা। এর পর মেসের বারান্দায় ওই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। হুঁশ ফিরলে স্ত্রীর উপরে নির্যাতনের কথা জানতে পারেন স্বামী৷ ততক্ষণে সেখান থেকে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা।
কাঁথি মহিলা থানায় অভিযোগ করে নির্যাতিতা
নির্যাতিতা বলছেন, ‘‘রাত ১২টা নাগাদ হুঁশ ফিরলে আমাকে দেখতে পাননি স্বামী। তিনি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। বারান্দায় মদ্যপ দাদাদের সঙ্গে আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেন। অভিযুক্তরা চলে গেলেও রাত ৩টে নাগাদ সদলবলে এসে প্রাণে মারার হুমকি দেয়।’’ কিন্তু সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ওই ছাত্রী এবং তাঁর স্বামীকে রামনগর কলেজের অদূরে পানিপারুল সেতুর কাছে আটকায় শতদলের অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, মোবাইল ফোন কেড়ে দুজনের পরিবারকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। অবশেষে বাধ্য হয়ে কাঁথি মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। তার ভিত্তিতে পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজকুমার এবং গোবিন্দকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গিয়েছে, রাজকুমার কান্ডগ্রাম আর গোবিন্দ পাণিপারুলের বাসিন্দা। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ-সহ মোট ছ’টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এ দিন কাঁথি আদালত দু’জনকে ছ’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ছাত্র নেতা শতদল এবং তার বাকি অনুগামীরা আপাতত গা ঢাকা দিয়েছে। শতদল রামনগর কলেজের অস্থায়ী কর্মী। তিনি নাকি রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির ঘনিষ্ঠ। এই নিন্দনীয় ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ সম্পূর্ণ ঘটনা সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছি। তবে ব্যক্তিগতভাবে যতদূর জানি শতদল এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না।’’