প্রীতি পোদ্দার, কল্যাণী: আরজি কর কাণ্ডের আবহে রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজে চমক-ধমক অর্থাৎ থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠে এসেছে। এমনকি এসব ক্ষেত্রে প্রশ্রয়দাতা হিসাবে একাধিক পদাধিকারীর বিরুদ্ধেও উপচে পড়েছে অভিযোগের পাহাড়। আর এই আবহেই এবার এই থ্রেট কালচার নিয়েই খবরের শিরোনামে উঠে এল কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাম। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৪০ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে।
থ্রেট কালচারের অভিযোগ এবার কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে!
সূত্রের খবর, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠে এসেছে ৪০ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। যাদের মধ্যে স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র শেখ মহম্মদ অখিল, ইন্টার্ন আলিম বিশ্বাস, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বিচিত্রকান্তি বালা এবং ওই বর্ষেরই আব্দুল হালিম দফাদার ছিল এই ৪০ জনের মধ্যে অন্যতম। অভিযোগ করা হয় তাঁরা সহপাঠীদের নানা ভাবে ভয় দেখাত এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে তাদের চরিত্র নিয়ে বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করত। পাশাপাশি জুনিয়রদের র্যাগিং করা হত। এছাড়াও তোলাবাজি ও জোর করে হস্টেল দখল করে রাখত এই ৪০ জন পড়ুয়া। রীতিমত থ্রেট কালচারে থাকতে হত সেখানকার চিকিৎসক পড়ুয়াদের। এবার এই সকল অভিযোগের ভিত্তিতে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল কলেজ কাউন্সিলরের তরফ থেকে।
বৈঠকে ৪০ জন পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কমিটির
জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে কলেজ কাউন্সিলের মিটিং হয়েছে। সেখানেই এই ৪০ জন মেডিক্যাল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে আসা থেট কালচারের অভিযোগগুলো ভালো করে খতিয়ে দেখে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ন্যূনতম ৬ মাসের জন্য তাঁদের বহিষ্কার করা হচ্ছে। শুধুমাত্র পরীক্ষা দিতে ও তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে ক্যাম্পাসে প্রবেশে করতে দেওয়া হবে তাঁদের।
এছাড়াও সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এইমুহুর্তে কল্যাণী মেডিক্যালে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে। এবং বৈঠকে এও বলা হয় যে স্টুডেন্টস বডি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেওয়া হবে না এই বহিষ্কৃত ৪০ জন পড়ুয়াকে। জানা গিয়েছে আজ থেকে হস্টেল চত্বরে বসবে পুলিশ পিকেট, চলবে টহলদারি। যদি তদন্তে এই ৪০ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়ে দেয় কলেজ কাউন্সিল।
প্রসঙ্গত, এর আগে আরজি করের ৫১ জন হাউজ স্টাফ, আরএমও, পিজিটি ইন্টার্নকে কলেজ হাসপাতালের কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে দীর্ঘ আন্দোলনের পর ধর্না তুলে নেওয়ার কথা জুনিয়র ডাক্তাররা বললেও থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে লড়াই এখনও চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই প্রসঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার জানান, ‘থ্রেট কালচারকে সমূলে বিনাশ করার জন্য প্রত্যেক কলেজে তদন্ত কমিটি বসাতে হবে। প্রয়োজন গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে এই থ্রেট কালচার আর না চলতে পারে।’