ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সময়টা ২০১২ সাল। সেই সময় রাজ্য সরকার সরকারি কর্মীদের জন্য এক চাঞ্চল্যকর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে জানানো হয়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং অন্যজন সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা হলে, এঁদের মধ্যে কোনও একজনই বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতা পাবেন। আর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসা মাত্রই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে।
তবে ২০২১ সালে রাজ্য সরকারের এই নিয়ম এক লহমায় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত দ্রুত প্রত্যেক শিক্ষকের বকেয়া মেটানোর নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু আদালতের নির্দেশ সঠিকভাবে পালন করেনি রাজ্য সরকার। কিছু জেলায় নির্দেশ আংশিক কার্যকর হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার বকেয়া মেটায়নি। তাই এই অভিযোগ জানিয়ে গত বছর আদালত অবমাননার মামলা হয়। সেই মামলাতেই রাজ্যের শিক্ষা, অর্থ সচিব-সহ কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিকের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করে হাইকোর্ট। এরপর আদালতে হাজির হয়ে বকেয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতিও দেন ওই অফিসাররা। কিন্তু ফের সেই নির্দেশ পালনে বেগতি দেখা যায়। প্রাপ্য ভাতা থেকে বঞ্চিত থেকেছেন সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা।
ফের আদালতের নির্দেশ অমান্য রাজ্য সরকারের
এই আবহে গত কয়েকদিনে ১৪ জনেরও বেশি সরকারী শিক্ষক শিক্ষিকারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাগুলির আইনজীবী দেবযানী সেনগুপ্ত এবং কোয়েল বাগ জানান, ২০১২ সালে দেওয়া সরকারের বিজ্ঞপ্তি ২০২১-এ বাতিল হওয়ার পরেও শিক্ষকরা বকেয়া পাচ্ছেন না। যার জেরে ২০১২-র পর থেকে কারও ১০ বা কারও পাঁচ, কারও বা দু’বছর ধরে বকেয়া থেকে গিয়েছে। মামলাটি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে ওঠে। আর এবার সেই মামলায় এক বিস্ফোরক রায় দেন বিচারপতি।
কড়া সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের!
সূত্রের খবর, এই মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানিয়েছেন, ‘আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারি শিক্ষকদের বকেয়া বাড়ি ভাড়া ভাতা মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এমনকি সেই বকেয়া অর্থের ওপর ৬ শতাংশ হারে সুদও প্রদান করতে হবে রাজ্য সরকারকে।’ এছাড়াও রাজ্য সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি জানান, ‘আদালত সরকারি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে দেওয়ার পরও কীভাবে বকেয়া টাকা মেটানো হয়নি, তা বুঝে উঠতে পারছি না। তাই ভবিষ্যতে যদি এমন কিছু ফের হতে দেখা যায়, তাহলে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে।‘