ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এবং কোনোরকমে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতে। আর সেই সময় থেকেই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে বেশ খানিকটা চির ধরেছে। বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করলেন মহম্মদ ইউনূস। কিন্তু এই আবহেই খোদ কলকাতায় উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর দাবি। কলকাতা পুলিসে মহিলা কনস্টেবল পদে নাকি কর্মরত রয়েছেন এক বাংলাদেশি নাগরিক!
জমি বিবাদের জেরে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য!
সূত্রের খবর, গাংনাপুর থানা এলাকায় দেবগ্রামের মাঠের পাড়া এলাকায় বেশ কিছুটা জমি সহ বাড়ি রয়েছে শুভঙ্কর সরকার নামে এক ব্যক্তির। পেশায় তিনি রেলকর্মী। তাঁর জমির পাশেই প্রমথ সিংহ’র জমি রয়েছে। শুভঙ্করের অভিযোগ শাসক দলের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁর জমি হাতানোর পরিকল্পনা করেছিল প্রমথ। আর সেই সুবাদেই হাইকোর্টে মামলা করেন শুভঙ্কর। কিন্তু এক অভিযোগে মামলা করতে গিয়েই উঠে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুভঙ্কর নিজে প্রমথ সিংহের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন। রাজ্য নির্বাচনী কার্যালয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করার পর জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসার পর দীনবন্ধু নামে এক ব্যক্তিকে বাবা সাজিয়ে প্রমথ সিংহ ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিলেন। এবার তাঁর ভোটার কার্ডের সূত্রে একে একে তাঁর পরিবারের সকলেই ভোটার তালিকায় নাম তোলেন ও রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোটার হয়ে যান।
মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হল অভিযোগকারীকে!
আর উল্লেখযোগ্য বিষয় হল সেই ‘ভুয়ো’ ভোটার কার্ড ও অন্যান্য তথ্য জমা করে কলকাতা পুলিসে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন প্রমথ সিংহের মেয়ে সুতপা সিংহ। সবটা জানার পরই ভোটার তালিকার যাবতীয় তথ্য-সহ জেলা নির্বাচনী কার্যালয়, পুলিস সুপার সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানান তিনি। কিন্তু মামলাকারীর অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৪ মে মাসে প্রমথ সিংহ এবং সুতপা সিংহের হিয়ারিং হওয়ার কথা থাকলেও শুভঙ্করকে একের পর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে জামিনে মুক্ত হয়েছেন শুভঙ্কর। কিন্তু মুক্তি পেলেও স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাঁকে এখনও খুনের হুমকি দিচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে মামলাটি ওঠে। মামলাকারীর আইনজীবী হিসেবে লড়ছেন রাজা বিশ্বাস ও অভিজিৎ সরকার। কিন্তু প্রমথ, সুতপা সহ তাঁর গোটা পরিবারের তরফে কোনও আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন না। তাই বিচারপতি নির্দেশে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবেন কলকাতার পুলিস কমিশনার। তখন যাবতীয় নথি যাচাই করে সবপক্ষের বক্তব্য শুনে এব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এবং রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে অভিযুক্তদের পরিচিতি প্রমাণের শেষ সুযোগ দিয়ে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়টি চার মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।