ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডে ধুন্ধুমার কাণ্ড গোটা বঙ্গে। তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ‘নো সেফটি, নো ডিউটি’ স্লোগান তুলে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন বাকি পড়ুয়ারা। শুধু আরজি করের ছাত্রছাত্রীরাই যে আন্দোলনে নেমেছেন এমনটা নয়, অন্যান্য একাধিক মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের পড়ুয়ারাও বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। সেই পথে পায়ে পা মিলিয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতারা। রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠে এসেছে একাধিক মন্তব্য। প্রশ্ন তুলতে বাকি রাখেননি পরিচালক তথা অভিনেত্রী অপর্ণা সেন।
কী বলছেন অপর্ণা সেন?
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মহিলাদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন তিনি সরকারের কাছে। এমনকি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে পুলিশের বিরুদ্ধেও তদন্ত চেয়েছেন পরিচালক তথা অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ কলকাতার বুকে যে নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটল, তা দেখে অত্যন্ত স্তব্ধ হয়ে যেতে হয়। এরপর সত্যিই আর কিছুই বলার থাকে না। কিন্তু তারপরও অনেক কিছু বলা বাকি থেকে যায়। সাধারণ নাগরিকদের মতো আমারও মনে প্রশ্ন জাগে কেন মহিলাদের প্রতিনিয়ত এরকম অত্যাচারিত হয়ে যেতে হবে সর্বত্র। কেন যথেষ্ট CCTV ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে না। আর এই সমস্ত দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। কেন না এই ঘটনাটি বেসরকারি নয় সরকারি হাসপাতালে ঘটেছে।’
পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে নামার আর্জি অপর্ণার!
এবং তিনি আরো বলেন যে,‘ ছাত্রছাত্রীদের দাবির সঙ্গে আমিও দাবি করছি যে অবিলম্বে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক এবং দোষীকে দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে আরও একটা তদন্ত হওয়া উচিত–যেটা অতনু ভট্ট তাঁর দেওয়ালে লিখেছেন, তাঁর সঙ্গে আমি একমত পোষণ করে বলছি যে, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও একটা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ তদন্তের কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, ‘মৃতাকে ওরকম রক্তাক্ত অবস্থায় পেয়েও প্রথমে পুলিশ কেন বিচার না করেই সেটাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে আখ্যা দিল? কীসের ভিত্তিতে এই ঘোষণা, সেটা জানান অধিকার আমাদের আছে। দ্বিতীয়ত, পুলিশ কেন মৃতার বাড়িতে ফোন করে বললেন এটা আত্মহত্যা? কার নির্দেশে এই ঘটনা ঘটল? তৃতীয়ত, পুলিশ কেন তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত করতে ব্যস্ত হয়ে উঠল? যে হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটল, সেই হাসপাতালেই কেন ময়নাতদন্তের প্রস্তাব উঠল? নাগরিক হিসেবে এই প্রশ্নের উত্তর জানার অধিকার আমাদের আছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, এই ঘটনার তদন্ত হোক। পুলিশের ভূমিকার তদন্ত হোক।’
এদিকে চাপের মুখে শেষমেশ ইস্তফা দিলেন আরজিকরের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু পদত্যাগের সময়েও ঘটিয়ে বসলেন দায়িত্বজ্ঞানহীন জঘন্য কাজ। এদিন পদত্যাগের সময় প্রেস মিটে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ তিলোত্তমা-র প্রকৃত নাম একাধিকবার মুখে নিলেন। আর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, ধর্ষণ-শ্লীলতাহানি কিংবা যৌন নিগ্রহের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিগৃহীতার নাম, তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম কখনই প্রকাশ্যে আনা যায় না। যার ফলে অভিযোগ উঠছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশও জানেন না অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।