ভয়ংকর গরমে পুড়ছে গোটা বাংলা। সঙ্গে বইছে অসহনীয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গরম তো কমছেই না, বরং প্রতিদিনই এক-দু ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। একাধিক জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। কলকাতাতেও ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছে তাপমাত্রা। এদিকে হাওয়া অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী এইমুহুর্তে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই চাতক পাখির মত আকাশের দিকে চেয়ে থেকেও বিশেষ কিছুই লাভ হবে না। তাই এবার কৃত্রিম ঠান্ডা বাতাসের স্বস্তি পেতে ঘরে ঘরে রীতিমত সারাদিনই চলছে এসি ও পাখা। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্সের দোকানে বাড়ছে এসি অথবা কুলার কেনার চাহিদা।
তবে জ্বালাপোড়া গরমের দিনেও এসি বা কুলার চালিয়ে স্বস্তি উপভোগ করতেও বিপত্তি। তার অন্যতম কারণ হল বিদ্যুৎ বিভ্রাট। প্রায়শই বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে যখন তখন। অনেক সময়ে রাতেও পাওয়ার কাট হচ্ছে। যার জেরে সারাদিনের খাটাখাটনির পর ঘুমের দফারফা হয়ে যাচ্ছে। যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মেজাজ চরমে। এমনকি বেশ কয়েকবার ক্ষোভের মুখে পরতে হয়েছে CESC-কে। তাই এবার ঘরে ঘরে AC ব্যবহার নিয়ে চরম সতর্কবার্তা দিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস।
CSC -র সঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের জরুরি বৈঠক
সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে গত শুক্রবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস জরুরি বৈঠক করেন সিইএসসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সেই বৈঠকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন তিনি।এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ সচিব শ্রী শান্তনু বসু, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান শ্রী পি বি সেলিম এবং সিইএসসির আধিকারিকরা। বিদ্যুৎ বিভ্রাট মেটাতে নানা পদক্ষেপ এবং নির্দেশও দিয়েছেন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস।
বিদ্যুৎমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের নয়া পদক্ষেপ
সেই সভায় তিনি জানিয়েছেন যদি কোনও জায়গায় যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয় বা বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামত করা হয় তাহলে সেই সময় সেই জায়গায় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন মোবাইল রিপেয়ারিং ভ্যান এবং মেরামতের জন্য কর্মী সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।
এছাড়াও এসি গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে তিনি জানিয়েছেন যদি কেউ নতুন এসি লাগিয়ে থাকেন তাহলে সত্বর ইলেকট্রিক অফিস বা বিদ্যুৎ দফতরে জানাতে হবে। তাহলে সে ক্ষেত্রে কোথাও বাড়তি লোডের প্রয়োজন হলে, শীঘ্রই তা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে।
প্রসঙ্গত, এয়ার কন্ডিশনারের ক্রমবর্ধমান লোডের কারণে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে বিদ্যুতের ত্রুটি বেড়েছে। তাই প্রতিটি অলি গলিতে প্রচণ্ড গরমে কেবল সারানোর কাজ করতে দেখা যাচ্ছে সিইএসসি কর্মীদের। সংস্থার তরফে এক আধিকারিক জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যার সমাধানে সুপারভাইজারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন সিস্টেম (এসসিএডিএ)-এর ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে যে কোনও জায়গায় সমস্যা হলে দ্রুত পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে। তাই বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে গ্রাহকদের সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে মনে করছেন সংস্থার আধিকারিক।