ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তপ্ত গোটা রাজ্য রাজনীতি। ঝড়, বৃষ্টি এবং রোদকে উপেক্ষা করে রাজ্যের সমস্ত সাধারণ মানুষ তিলোত্তমার সুবিচারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল চালিয়ে যাচ্ছে। বাদ যায়নি জুনিয়র চিকিৎসকরাও। তাঁরা কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। আর এই আন্দোলন ৭০ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের সামনে নিজেদের দাবিতে অনড় অবস্থানে জুনিয়র ডাক্তাররা। লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া কিছুতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে না তাঁদের প্রতিনিধি দল। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পর চারদিন পেরেলেও কর্মবিরতি হয়েই চলেছে জুনিয়র ডাক্তারদের। এই আবহেই তাই বাধ্য হয়ে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।
জানা গিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের নাম জানতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির প্রিন্সিপালদের কাছে চিঠি গিয়েছিল স্বাস্থ্যভবনের তরফ থেকে। কিন্তু তাতেও ভয় পায়নি জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবুও আন্দোলন জারি রাখা হয়েছে। এই আবহেই এবার সব সরকারি হাসপাতালে এজেন্সির অধীনে থাকা নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে চিঠি গিয়েছে হাসপাতালগুলির প্রধানের কাছে। আর সেই নির্দেশিকা পেতেই বিভিন্ন হাসপাতালে সেই নিয়ম মেনে শুরু হয়ে গিয়েছে নানা প্রসেস।
বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের!
স্বাস্থ্যভবনের তরফ থেকে আসা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখন থেকে সরকারি হাসপাতালে এজেন্সির তরফ থেকে কর্মরত প্রত্যেক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীকে ডিউটিতে থাকাকালীন নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে সকলের নির্দিষ্ট আই কার্ড। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বায়োমেট্রিক হাজিরা। সেই হাজিরা রিপোর্ট প্রতি মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছে জমা করতে হবে। ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চৈতালি চক্রবর্তীও এই নিয়ম কার্যকর করার বার্তা দিয়েছেন। এবং হাসপাতালে নিযুক্ত এজেন্সির নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে রাখতে হবে ওয়াকিটকি।
রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে করা নির্দেশিকা স্বাস্থ্যভবনের!
শুধু তাই নয় সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পুরুষ নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মহিলা নিরাপত্তাকর্মী রাখতে হবে। কর্মীদের ডিউটি রোস্টার শেয়ার করতে হবে হাসপাতাল সুপার অথবা সহকারী সুপারদের নজরদারিতে। তবে এই নির্দেশিকা যে শুধুমাত্র চিকিৎসক এবং নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য তা কিন্তু নয়। এই নির্দেশিকার মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে রোগীদের পরিবারগুলিকেও। জানা গিয়েছে রোগী পিছু নির্দিষ্ট কয়েকজন ভিজিটিং আওয়ার্সেই ঢুকতে পারবেন ওয়ার্ডের ভিতরে। কারণ বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে নানা কারণে রোগীর আত্মীয়র সঙ্গে ঝামেলা হয়। এমনকি পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। তাই সেটি বন্ধ করতে এই নিয়ম জারি করা হয়েছে।