ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: একেতেই রেকর্ড গরমে নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর, তার উপর দেশজোড়া কয়লা সঙ্কটের জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গোটা দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কার আবহ। এদিকে গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে বাড়িতে বাড়িতে ইন্সটল করা হচ্ছে AC, কুলার এবং ফ্যান। ফলত জেলায় জেলায় বাড়ছে বিদ্যুতের ইউনিট। এবার সব দিক পর্যবেক্ষণ করে নয়া সিদ্ধান্ত নিল CESC। যা শুনে রাতের ঘুম উড়ল জনসাধারণের।
ইতিমধ্যেই গরমের দাপট বাড়তে না বাড়তেই পাওয়ার কাটের নানা সমস্যায় জর্জরিত গ্রাহকেরা। তার উপর মাসখানেক আগেই বিদ্যুৎ বিলের স্ল্যাব পরিবর্তন করার খবর ছড়িয়েছিল। ফলে গ্রাহকেরা আশঙ্কা করেছিল যে বিদ্যুৎ বিলের এই স্ল্যাব পরিবর্তন করার ফলে খরচ বেড়ে যাবে। তবে এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। মধ্যবিত্তদের মাথার উপর আরও এক চাপ পড়তে চলেছে। কারণ সম্প্রতি বিদ্যুৎ মাশুল বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে CESC। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সেই আবেদন অনুমোদন করলে সংস্থার গ্রাহকদের ইউনিট প্রতি মাশুল প্রায় দেড় টাকা বেড়ে যাবে।
কমিশনকে পিটিশন জমা CESC-র
এর আগে 2017 সালের জানুয়ারিতে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি বাবদ মাশুল শেষবার বাড়িয়েছিল CESC। এখন ইউনিট প্রতি গড় মাশুল দিতে হয় 7টাকা 31 পয়সা। সম্প্রতি কমিশনের কাছে CESC অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স রিভিউ ও ফুয়েল অ্যান্ড পাওয়ার পারচেজ কস্ট অ্যাডজাস্টমেন্ট এর একটি পিটিশন জমা দেয়। সেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে যে, 2019-20, 2020-21 ও 2021-22 সালে ব্যয় যথাক্রমে 1161.73 কোটি, 1123 কোটি ও 1244.72 কোটি টাকা বেশি হয়েছে। এবার সেই অর্থ যদি তারা আদায় করে তাহলে 2024-25, 2025-25 ও 2026-27 সালে গ্রাহকদের ইউনিট প্রতি গড় মাশুল সুদ-সহ যথাক্রমে আরও 1.60 টাকা, 1.50 টাকা ও 1.50 টাকা দিতে হবে। যা গ্রাহকদের কাছে অনেকটাই।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিদ্যুৎ ইউনিটের দাম বৃদ্ধিতে CESC র কোনো দোষ নেই, কারণ আইন অনুযায়ী, প্রতি বছর 30 নভেম্বরের মধ্যে কমিশনের কাছে APR ও FPPCA দাখিল করতে হয়। CESC আইন মেনে প্রত্যেক বছরেই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তা জমা দিলেও কমিশন তা পেয়েও চুপচাপ ছিল। যদি প্রতি বছর কমিশন CESC-র APR ও FPPCA-র নির্দেশ বের করে দিত, তা হলে গ্রাহকদের এতটা চাপে পড়তে হত না।
বস্তি উন্নয়ন সমিতির দাবি
কিন্তু গত প্রায় সাড়ে 7 বছর বাড়তি টাকা মাসিক বিলে যোগ করে আদায় করেনি CESC। এদিকে, CESC-র গ্রাহকদের বিদ্যুৎ মাশুল বাড়ার যে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি। বুধবার তারা এ ব্যাপারে কমিশনের কাছে লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য জমা দিয়েছেন। তাঁদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে যে রাজ্যে সমস্ত পরিবারকে মাসে বিনামূল্যে যেন 200 ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হয়।