ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: SSC নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ঐতিহাসিক রায় দান করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বাতিল করে দিয়েছিল ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল। এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্তে চাকরিহারা প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা। তবে যোগ্য প্রার্থীরা এত সহজে নিজেদের হকের চাকরি ছাড়ার পাত্র নয়। তাই হাইকোর্টের রায় এর বিরুদ্ধে আরেক মামলা করা হয় দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টে। গত মঙ্গলবার ছিল সেই মামলার শুনানি পর্ব।
মামলার প্রথম শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়
গত মঙ্গলবার SSC মামলার শুনানি চলাকালীন অবশেষে স্কুল সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ SSC চাকরিহারা প্রার্থীদের যোগ্য ও অযোগ্যর পরিসংখ্যান স্বীকার করে। মামলার শুনানির প্রথম ভাগে SSC এর তরফ থেকে দাবি করা হয়, ৭০০০ প্রার্থী চাকরি অবৈধভাবে হয়েছিল। দ্বিতীয়ভাবে বলা হয়, সেই সংখ্যাটা ৮ হাজার ৩২৪। অর্থাৎ এই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিচারপতি অপরাধমূলক পরিকল্পনার গন্ধ পাচ্ছে। তবে এর মাঝেও খানিক স্বস্তি পেল সদ্য চাকরিহারারা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে এখনই চাকরি যাচ্ছে না ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। আগামী ১৬ জুলাই, এই মামলার পরবর্তী শুনানি আয়োজন করা হবে ততদিন পর্যন্ত চাকরি বহাল থাকবে তাঁদের।
নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও একবার হাইকোর্ট এর ক্ষোভের মুখে রাজ্য
অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন সরকারি আধিকারিকদের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। সেই সরকারি আধিকারিকদের মধ্যে অন্যতম হল সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সৌমিত্র সরকার, অশোক সাহার মতো SSC-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন নিয়েই চলছে নানা জল্পনা। এদিকে মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা কেন হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়া সত্ত্বেও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না তা নিয়েও উঠছে নানা মন্তব্য। তাই বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি কার কাছ থেকে আসবে তাই নিয়ে আদালতে ধোঁয়াশা এখনও জারি করা হয়েছে।
বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত কার?
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি প্রসঙ্গে উঠে আসছে রাজ্যপালের নাম। কারণ বিশেষ সূত্র মাধ্যম জানা গিয়েছে, শান্তিপ্রসাদসহ বেশ কয়েকজনের নিয়োগকর্তা রাজ্যপাল। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই মুখ্যসচিবের। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রসঙ্গ উঠতেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাল্টা প্রশ্ন তোলেন তাহলে গত দুই বছর ধরে মুখ্যসচিব অনুমতি দিচ্ছেন না বলার পরে এখন কেন উল্লেখ করা হচ্ছে যে তাঁর অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই? কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবী জানায় ’আইন অনুসারে সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর আবেদন মুখ্যসচিবের কাছেই পাঠাতে হবে। তাই রাজ্যপালের কাছে সেই আবেদন পাঠাবেন।’
আরও পড়ুনঃ বজ্রঝড় সহ ৬০ কিমি বেগে কালবৈশাখী! ভয়ঙ্কর হবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া, জারি অ্যালার্ট
সমস্ত তথ্য বিবেচনা করার পর আশঙ্কা করা হচ্ছে যে পদাধিকারবলে রাজ্যপাল এদের নিয়োগকর্তা হলেও বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর বিষয়টি মুখ্যসচিবের হাতে সমর্পণ করা থাকে। শেষ পর্যন্ত জানা যায়,আগামী ১১ জুন মামালার পরবর্তী শুনানিতে মুখ্যসচিবকে আদালতে তাঁর জবাব জানাতে হবে।