মিড ডে মিলের তদারকির সাথে শিক্ষকতা, এক শিক্ষকে স্কুল চলছে মালদায়! পড়ুয়ারা নিচ্ছে ক্লাস

Published on:

Malda School

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে যেখানে SSC এবং প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক খবর শিরোনামে উঠে আসছে। আর সেই সঙ্গে ততই রাজ্যে শিক্ষার মান আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। কোনো কোনো স্কুলে আবার এও দেখা যাচ্ছে যে শিক্ষার সঠিক পরিকাঠামো না থাকায় পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে যাচ্ছে। আজকের প্রতিবেদন সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা তুলে ধরতে চলেছে।

ঘটনাটি কী?

আসলে ২০০১ সালে মালদহের গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ৬ জন শিক্ষক নিয়ে পথ চলা শুরু। দুই বছর পর অর্থাৎ ২০০৩ সালে অনুমোদন পায়। সে সময় মাত্র দু’জন শিক্ষকের বেতন চালু হয়। এরপর ধাপে ধাপে বাকি ৪ জন শিক্ষকেরই বেতন চালু হয়। এর পরে এক শিক্ষক মারা যান। তারপর ধীরে ধীরে চার শিক্ষকও অবসর নেন। পরে থাকেন শুধু একজন শিক্ষক। কিন্তু এসবের পরে আর কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি ঐ কেন্দ্রে। ২০২২ সাল থেকেই ওই একজন শিক্ষকই রয়েছেন। তিনি হলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহানুল হক। কিন্তু তাঁর কাঁধে রয়েছে একাধিক দায়িত্ব।

WhatsApp Community Join Now

প্রধান শিক্ষক এর ওপর পড়েছে স্কুলের যাবতীয় কাজের ভার

জানা যায় রাহানুল হক একদিকে যেমন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ঠিক তেমনই তিনি পড়ুয়াদের ক্লাস নেন, আবার স্কুল পরিচালনা করেন। শুধু কি তাই? স্কুলে আর কোনো কর্মী না থাকায় তিনিই আবার মিড ডে মিলের তদারকি করেন। এই কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি এক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘আমাকে পড়ানোর পাশাপাশি সমস্ত কাজ করতে হয়।’ এদিকে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে স্কুলে খাতায়-কলমে মোট ৮১ জন পড়ুয়া আছে । কিন্তু স্কুলে নিয়মিত আসে ৩০-৩৫ জন পড়ুয়া।

শিক্ষকের অভাবের জন্যই ছাত্ররা ঠিকমত আসে না স্কুলে। এই প্রসঙ্গে রাহানুল হক জানান, ‘ চারটি শ্রেণির ছাত্রছাত্রীকে পড়ানোর পাশাপাশি ক্লাস, মিড ডে মিলের বাজার এবং অফিসের সমস্ত কাজ সামলাতে হয়। তাই একটি ক্লাস নিতে গেলে যেমন অন্য ক্লাস ফাঁকা থাকছে, তেমনই মিড ডে মিল-সহ স্কুল পরিচালনার জন্য অফিসের কাজ করতে গেলেও ফাঁকা থাকছে ক্লাস।’

স্কুলে অষ্টম শ্রেণির দাদারা পড়াচ্ছে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের!

গত দু’বছর ধরে এ ভাবেই চলছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। শিক্ষকের অভাবের কথা প্রধান শিক্ষক রাহানুল হক অনেকবার এলাকার এসআই অফিস, ব্লক প্রশাসনের কাছে জানলেও জন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অগত্যা পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নিতে হচ্ছে এক ক্লাস উপরের অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণির দাদাদের। অনেক সময় আবার এও দেখা যায় যে সপ্তম শ্রেণির ছাত্ররাও ক্লাস নিচ্ছে তাঁদের নিচু ক্লাসের। স্কুলের এই বেহাল দশা দেখে একের পর অভিযোগ তোলে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্কুলের সঠিক পরিকাঠামো নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। বাধ্য হয়েই একপ্রকার দূরের অন্য স্কুলে পাঠাচ্ছেন ছাত্রদের। এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা হাসিনা বিবি জানান, ‘গ্রামে স্কুল হওয়ায় প্রথমে খুব আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু এখন পড়ুয়া থাকলেও শিক্ষক একদমই নেই। এভাবে চলতে থাকলে তো একদিন স্কুলটাই বন্ধ হয়ে যাবে।’

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন