ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গতকাল ছিল রথযাত্রা। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড় ছিল চোখে দেখার মত। রথের দড়ি একবার টানতে অনেক দূর থেকে ছুটে এসেছে দর্শনার্থীরা। অন্যদিকে দিঘায় পুরনো জগন্নাথ মন্দিরেও রীতি মেনেই প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু গতকাল দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের কথা থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় এ বছর রথে উদ্বোধন হচ্ছে না দিঘার জগন্নাথ মন্দির। তবে আগামী বছর থেকেই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের রথের রশিতে টান পড়তে চলেছে।
তবে রথযাত্রা উপলক্ষে দিঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দিরের শুভ উদ্বোধন না হলেও পুরনো জগন্নাথ মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরে রীতি নিয়ম মেনে জগন্নাথ দেবের পুজো করা হয়ে থাকে। এই বছরেও তাই হয়েছে। রথযাত্রার উপলক্ষে ওল্ড দিঘা জগন্নাথ ঘাটে পুরাতন মন্দিরে শুরু হয়েছে জগন্নাথ দেবের বাৎসরিক পুজো। সেক্ষেত্রে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসির বাড়ি হিসেবে এই পুরনো মন্দিরকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানেই এবার বড় গণ্ডগোল হল। জানা গিয়েছে শাসক দলের কিছু স্থানীয় নেতার অপ্রত্যাশিত ও অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপে জগন্নাথ দেবের এই মাসির বাড়ি তাঁরা দখল করে নিয়েছে।
মাসির বাড়ি দখলে মরিয়া এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতা!
সূত্রের খবর, রথযাত্রার আগের দিন অর্থাৎ শনিবার স্থানীয় এলাকার তৃণমূল এর তরফ থেকে কয়েকজন নেতার মদতে জগন্নাথ দেবের প্রস্তাবিত মাসির বাড়ি থেকে খুলে ফেলা হয়েছে মন্দিরের ইতিবৃত্ত লেখা পাথরের ফলক। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠাতার নামের ফলকও। এই কাজে বাধা দিতে গিয়ে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সমীর কুমার মণ্ডল অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই ভিত্তিতে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সমীর মণ্ডলের ছেলে সঞ্জিত মণ্ডল বলেন,”সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের মন্দির আইন অনুযায়ী এই মন্দিরটিকে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি হিসেবে নথিভুক্ত করানো হয়েছে। সেখানে বাবা ছাড়াও স্থানীয় তিন জন মূল কমিটিতে ছিলেন। যেহেতু সরকারি উদ্যোগে মন্দিরটি জগন্নাথের মাসির বাড়ি হওয়ার কথা,তাই কয়েকজন স্বার্থান্বেষী মানুষ মন্দিরকে দখল করে নিয়েছে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার মন্দিরটিকে মাসির বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করার পর থেকেই প্রতিষ্ঠাতা সমীরবাবুর সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিরোধ তৈরি হয়। গোটা মন্দিরের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে একেবারে মরিয়া হয়ে ওঠে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ। তা বুঝতে পেরে কিছুদিন আগে ওই মন্দিরের গায়ে একটি ব্যানার লাগিয়ে দেন সমীরবাবু। যেখানে লেখা ছিল ভারত সরকারের ১৮৮২ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনে ওই মন্দিরটিকে আদি জগন্নাথ সেবাশ্রম হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেই ইতিহাস সংক্রান্ত ফলক খুলে ফেলা হয় জোর করে। যার জেরে এই বিবাদের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুনঃ গতি বাড়ছে অনেক, সময় লাগবে আরও কম! এই ট্রেনগুলোর স্পিড বাড়াল পূর্ব রেল, দেখুন তালিকা
এই প্রসঙ্গে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাসক দলের স্থানীয় নেতা বসন্ত কুমার জানা। তিনি বলছেন,”মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা আমাদের কাছে সবার আগে। মন্দির রঙ করার জন্য পাথরের ফলকগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি রাখা আছে অন্য জায়গায়। পরবর্তীকালে মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হলে মন্দিরের গায়ে কোথাও লাগানো হবে।”