ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে কুমির এবং বাঘের আক্রমণের ভয় একমাত্র সুন্দরবন গেলেই পাওয়া যায়। হামেশাই খবরের শিরোনামে উঠে আসে যে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে হয় বাঘের শিকার হতে হচ্ছে অথবা ভয়ংকর কুমিরের। তবে এবার বিপদ দক্ষিণের উপকূলবর্তী অঞ্চল সুন্দরবন নয়। বিপদের জাল ছড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স এলাকায়। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের মনে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ডুয়ার্সের খালবিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রোকোডাইল ফিশ নামে পরিচিত একশ্রেণির রাক্ষুসে প্রজাতির মাছ। যার ফলে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। কারণ, ওই বিশেষ প্রজাতির মাছ জলে থাকা মানেই অন্য প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যভাণ্ডার সাবাড় করে দেয়। গত রবিবার মাদারিহাট লাগোয়া হান্টাপাড়ায় একটি ডোবা থেকে মৎস্যজীবী বকুল আলির ফেলা জালে ঐ ভয়ংকর প্রজাতির মাছ উঠে আসে। লম্বায় প্রায় ৭-৮ ইঞ্চি।
কী এই ক্রোকোডাইল ফিশ?
সূত্রের খবর ক্রোকোডাইল ফিশের অফিশিয়াল নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। এটি মূলত অর্নামেন্টাল ফিশ। ঘরের শোভা বাড়াতে অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়। তবে অন্য মাছের সঙ্গে মিশে গেলে ক্রোকোডাইল ফিশ ঘাতকের ভূমিকা নেয়। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মৎস্য শিক্ষাসংস্থানের বিজ্ঞানী পরিমল সরদার জানিয়েছেন, ‘ক্রোকোডাইল ফিশ আদতে ক্লিনার ফিশ। এটির অর্নামেন্টাল ভ্যালু থাকলেও অন্য মাছের জন্য অত্যন্ত ভয়ংকর। ডোবা পুকুরে চাষ করা মাছের ভিড়ে ক্রোকোডাইল ফিশ ঢুকে পড়লে মুশকিল। তাই এটি দেখা গেলে তা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করা দরকার।’
নদীতে ক্রোকোডাইল ফিশ এর ইতিহাস
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ওই মাছ দেখা যায়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে ওই মাছের দেখা মিলেছে। কয়েক বছর আগে ক্রোকোডাইল ফিশের চেয়ে হিংস্র এবং দ্রুত বংশবিস্তারে সক্ষম অ্যালিগেটর গার ফিশ কলকাতার সুভাষ সরোবরে পাওয়া গিয়েছিল।’ এর আগে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ফালাকাটার পূর্ব ঝাড়বেলতলির এক কিশোর বুড়িতোর্ষা নদীতে কয়েক ফুট লম্বা একটি ক্রোকোডাইল ফিশ পেয়েছিল। এমনকি এর আগে ২০২১ সালে শিলিগুড়ি লাগোয়া আমবাড়িতেও মিলেছিল এই ক্রোকোডাইল ফিশ। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে অনেক আগে থেকেই এই ভয়ংকর মাছ বংশবিস্তার করে চলেছে।