উত্তর চব্বিশ পরগনারঃ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের অনেকেরই এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার ছবিটাও স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু এবার কি মানব পাচার চক্র সক্রিয় হচ্ছে সীমান্ত এলাকায়? প্রশ্নটা আজ উঠছে। সম্প্রতি, এক ঘটনা এই বিষয়টিকে আরো বেশি করে প্রাসঙ্গিক করে তুলছে। নদী থেকে উদ্ধার হওয়া রহস্যজনক ব্যাগকে কেন্দ্র করে সীমান্তে ফের পাচার চক্রের হদিস পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেল।
প্রথমবারের মতো এই ঘটনা ঘটে যাওয়ার ফলে BSF সহ দেশের নিরাপত্তারক্ষীরা আরো বেশি সতর্ক হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এজেন্সির সন্দেহ ছিল যে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতসহ অন্যান্য দেশে মানব পাচার হচ্ছে। আর এই সন্দেহ আরও প্রবল হয় যখন BSF জওয়ানরা সোনাই নদী থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করে। কিন্তু কি ছিল এই রহস্যময় ব্যাগে? কেন এটিকে ঘিরে মানব পাচার চক্রের হদিস পাওয়া যেতে পারে? এই উত্তরগুলি খুঁজে দেখা যাক।
নদীর জল থেকে উদ্ধার হল রহস্যময় ব্যাগ
সম্প্রতি, BSF এক বিবৃতিতে জানায়, শুক্রবার-শনিবার রাত ১২ টার দিকে বোট টহলের সময় সোনাই নদীতে একটি সন্দেহভাজন সাদা ব্যাগ ভাসতে দেখে। টহলরত নিরাপত্তারক্ষীদের সন্দেহ হলে, তাঁরা ওই ব্যাগের কাছে পৌঁছে অবাক হয়ে যায়। কারণ, তখন ব্যাগটিকে দড়ি দিয়ে বাংলাদেশের দিকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যাগটি উদ্ধার করে BSF।
রহস্যময় ব্যাগ থেকে কি পাওয়া গেল?
ব্যাগটি আটকের পর উত্তর চব্বিশ পরগনার তারালি-১ পোস্টে নিয়ে আসা হয়। ব্যাগটি খুলতেই সবাই অবাক হয়ে যান। কারণ, ব্যাগে বাংলাদেশি পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ছাড়াও আরও অনেক জিনিস ছিল। BSF সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত ব্যাগটি থেকে ৪৩ টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং বাংলাদেশ পুলিশের দেওয়া ৬ টি ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের পর দেখা গেছে যে, সব পাসপোর্টই আসল। এছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রোয়েশিয়াকে ৬টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়েছে। সেগুলি আসল না নকল তা খতিয়ে দেখতে এখনই তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ সীমান্তে সক্রিয় হচ্ছে মানব পাচার চক্র?
BSF-এর এক সিনিয়র কর্তা এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান যে, এটা হতে পারে যে অনুপ্রবেশকারীদের একটি গ্রুপ দ্বারা ব্যবহৃত পাসপোর্ট এবং ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ক্রোয়েশিয়া থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তাঁর মতে, কিছু পরিবর্তন করলেই এগুলি অন্য অনুপ্রবেশকারী বা পাচারকারীরা ব্যবহার করতে পারবে। তিনি আরো জানান যে, স্পষ্টতই একটি বড় র্যাকেট এই পিছনে কাজ করছে। BSF-এর মুখপাত্র বলেছেন যে তাঁরা তেঁতুলিয়ার কাস্টমস বিভাগ এবং স্থানীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ এবং নথি হস্তান্তর করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন।