ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: চারিদিকে বিক্ষোভ, আন্দোলন, মিছিল এবং জনগর্জনের মাঝেই সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় আরজি কর মামলার শুনানি। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয় আর এই শুনানিতে রাজ্যকে তীব্র ধিক্কার জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি জানতে চান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা কখন যুক্ত করা হয়েছিল। সেই সময় জবাবে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল। এর পর দুপুর ২টো ৫৫মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা যুক্ত করা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানতে চান তাহলে জেনারেল ডায়েরি কখন করা হয়েছিল। জবাবে বলা হয় জেনারেল ডায়েরিও ২টো ৫৫ মিনিটেই করা হয়েছিল। এরপরই উঠে আসে ময়নাতদন্ত সম্পর্কিত নানা তথ্য।
১০ বার জিডি এন্ট্রি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলল প্রধান বিচারপতি!
আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি প্রশ্ন তোলেন সঠিক ভাবে ময়নাতদন্ত হয়েছে কি না। তখন CBI এর তরফেও জানানো হয়, ময়নাতদন্ত কখন করা হয়েছে সেই সময়ের উল্লেখ নেই। যদিও রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তি, রিপোর্টে সব কিছু উল্লেখ রয়েছে। তখন এজলাসে ফিরোজ এডুলজি বলেন, “দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শুধুমাত্র ১০ বার জিডি এন্ট্রি করা হয়েছে। পুরোটা পরে তৈরি করা হয়নি তো? অনেক রহস্য রয়েছে।”
আইনজীবীর এই সংশয়ের প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যদি রিপোর্টে কোনো সন্দেহ থেকে থাকে তাহলে তাঁর কাছে রিপোর্ট চাওয়া হোক। এদিন CBI এর তরফে আদালতে জানানো হয়, ফরেন্সিক রিপোর্ট নিয়ে তাদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেটি দিল্লির এইমস বা অন্য কোনও সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাতে চায়। এমনকি প্রধান বিচারপতিও জানতে চান, মৃতদেহ কখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্তের চালান কোথায়, সে নিয়েও প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।
রাজ্যকে এবার শাস্তির দায় নিতে হবে!
বিচারপতি পার্দিওয়ালা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ময়নাতদন্তের সময় যে কনস্টেবল ছিলেন, তার এই চালান নিয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু সেই চালান সম্পর্কে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। যদি এই চালান না পাওয়া যায় তাহলে রাজ্য সরকার পুরোপুরি দায়ী থাকবে।’ এছাড়াও এদিন প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করতে হবে সিআইএসএফকে। এবং হাসপাতালে কত বরাদ্দ করা হয়েছে, হাসপাতালে কী কাজ হয়েছে, সে বিষয়ে পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যকে জানাতে হবে।