ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এখন অনড় জুনিয়র ডাক্তারেরা। লক্ষ্য একটাই যতক্ষণ না দাবি মেটানো হচ্ছে ততক্ষণ কোনোভাবেই তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবে না। তবে শুধু জুনিয়র ডাক্তাররা নয় পায়ে পা মিলিয়েছে সাধারণ মানুষেরাও। দফায় দফায় কখনও মিছিল, কখনও মানববন্ধন করা হচ্ছে, কখনও লালবাজার তো কখনও আবার স্বাস্থ্যভবন অভিযান হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায় শহরের রাজপথটাই এখন ঘর হয়ে গিয়েছে আন্দোলনকারীদের কাছে।
খাবার এবং জলের ব্যবস্থা আন্দোলনকারীদের জন্য
নৃশংস ঘটনার এক মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও বিচার না মেলায় শহরের রাজপথে দিন রাত কাটাচ্ছে পুরুষ এবং মহিলা জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাইতো তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষ। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, বহু মানুষ যে কোনও ভাবে আন্দোলনের গায়ে গা-লাগিয়ে দাঁড়াতে চাইছেন। লক্ষ্য একটাই আন্দোলন যেন না থামে। এদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের যাতে অভুক্ত থাকতে না হয়, তার জন্য গতকাল অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকে কেউ নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে এসেছিলেন, কেউ এনেছিলেন বিস্কুট, শুকনো খাবার, ন্যাপকিন ও জলের বোতল। ঝাঁ-ঝাঁ রোদে কেউ আবার আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন হাতপাখা।
আন্দোলনের মাঝেও সমাজ সেবা চালিয়ে যাচ্ছে জুনিয়র ডাক্তাররা!
শুধু তাই নয় মাঝে মধ্যে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি আসায় তাদেরকে তুলে দেওয়া হচ্ছে এক বড় ত্রিপল। আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘মানুষ যে ভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে তাতে আমরা অভিভূত। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। আর এটাই আমাদের প্রধান শক্তি।’ তবে সাধারণ মানুষের তরফে পাঠানো অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার নিয়ে তৈরি হল আরেক সমস্যা। বেশ কিছু খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সেই কারণে জুনিয়র ডাক্তাররা এক নতুন পরিকল্পনা মাধ্যমে আবারও এক মানবিকতার পরিচয় দিলেন। যে খাবার বেশি বলে মনে হচ্ছে বা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলি ছোট ছোট পথশিশুদের বিলি করে দিচ্ছেন। অথবা বেশ কিছু এনজিও-র সঙ্গেও যোগাযোগ করে তাঁদের বাড়তি খাবার পাঠিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরও পড়ুনঃ মেসের বারান্দায় কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ, ধৃত তৃণমূলের দুই ছাত্র নেতা
প্রসঙ্গত, আন্দোলনে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে মহিলা জুনিয়র ডাক্তারদের। মেয়েগুলোকে ওয়াশরুম খুঁজতে এদিক-সেদিক ছুটতে হচ্ছিল। তবে সেই সমস্যার সমাধান করতে এগিয়ে এল সাধারণ মানুষ। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে স্বাস্থ্যভবনের সামনে রাস্তার একপাশে গত মঙ্গলবার রাত দু’টো নাগাদ দেখা গেল বায়ো-টয়লেটের সারি। গতকাল আরও বেশ কয়েকটি বায়ো-টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা দেখে আপ্লুত গোটা সমাজ।