ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: টেলিভিশন দুনিয়ায় যে সকল রিয়ালিটি শো চলছে তার মধ্যে অন্যতম হল ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’। যেটি কিনা ২০০০ সালে অমিতাভ বচ্চনের উপস্থাপনায় চালু হয়েছিল। সেই সময় থেকেই টিভির এই রিয়ালিটি শোটির জনপ্রিয়তা শীর্ষে পৌঁছোয়। কারণ এই জনপ্রিয় গেমের মাধ্যমেই অনেকেই যেমন একদিকে কোটিপতি হয়েছে ঠিক তেমনই এই গেমের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি খুঁজে পেয়েছে। ঠিক তেমনই স্বপ্ন পূরণের স্বাদ গ্রহণ করেছে গ্রাম বাংলার প্রান্তিক ঘর থেকে উঠে আসা এক উচ্চশিক্ষিত যুবক।
আরামবাগ মহকুমার গোঘাটের বেঙ্গাই অঞ্চলের বাসিন্দা জয়ন্ত। সেখানে ছোট্ট একটি টিন ভাঙ্গা মাটির ঘরে মা ,বাবা এবং বোনকে নিয়ে থাকেন জয়ন্ত। ছোট থেকে সে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তাই এই মেধার জোর দিয়েই জয়ন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই অমিতাভ বচ্চনের এই জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো-তে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। তার জন্য তিনি দীর্ঘ ৭ থেকে ৮ বছর ধরে নিজেকে তৈরি করছিলেন। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে মাস্টার ডিগ্রী করেছেন। বর্তমানে তিনি এখন একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পড়ান। অবশেষে দীর্ঘ বছরের অধ্যায়নের পর পৌঁছন স্বপ্নের মঞ্চে। মুখোমুখি হন বলিউডের বিগ বি এর সঙ্গে। আর সেখানেই একের পর এক প্রশ্নের জবাব দিয়ে একেবারে জিতে নেন ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
জাতীয় স্তরে তুলে ধরলেন গ্রামীণ সমস্যা
তবে শুধুমাত্র কেবিসি তে অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি যাননি, এমনকি অমিতাভকে চাক্ষুস দেখার জন্যও তিনি সেই মঞ্চে যাননি। আসলে তিনি কেবিসি তে গিয়েছিলেন মূলত নিজেদের গ্রামের এক সামাজিক সমস্যা বচ্চন স্যারের কানে তোলার জন্য। আর আগে এমন কয়েকজন অংশগ্রহণকারীরা জাতীয় স্তরের এই জনপ্রিয় শোয়ে তুলে ধরেছিল তাঁদের গ্রামের ও পরিবারের দুরাবস্থার কথা। সেই সুবাদে তিনিও জানান গ্রামের মানুষেরা শৌচালয় থাকলেও এখনও গ্রামের বহু মানুষ মাঠে ঘাটে শৌচকার্য সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি বলেন, যে পুকুরে গরু, হাঁস ও বিভিন্ন পশু স্নান করানো হয় সেই পুকুরেই মানুষ স্নান করছে, জল খাচ্ছে। তাই কেবিসির মঞ্চ থেকে জয়ন্ত গ্রামের মানুষদের বার্তা দেয় স্নানাগার এবং শৌচাগার ব্যবহার করার জন্য।
স্নানাগার নির্মাণে জয়ন্তকে সাহায্য বিগ বি-র!
এমনকি জয়ন্ত এও জানান যে তাঁর বাড়িতে শৌচালয় রয়েছে, কিন্তু কোনও স্নানাগার নেই। ফলে মা-বোনও একপ্রকার বাধ্য হয়েই পুকুরেই সকলের সামনেই স্নান করে। সেই কথা শুনে বিগ বি অমিতাভ বচ্চন তাঁর বাড়ির স্নানাগার তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। অমিতাভ বচ্চন জানান, তিন মাসের তিনি তাঁর বাড়িতে স্নানাগার তৈরি করে দেবেন এবং তার প্রস্তুতিও নিতে বলেছেন।