ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ আরজি কর মামলার একমাস পেরিয়ে গেলেও এখনো চিকিৎসকরা তাঁদের দাবিতে অনড়। পুলিশ কমিশনার সহ একাধিক সরকারি আধিকারিকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিকে ছাত্রসমাজ তাঁদের আন্দোলনে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছিলেন। তবে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা কিন্তু সেটাও চাননি। তাঁরা সম্প্রতি এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজিও হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার, বিকেল ৫ টায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এদিন নবান্নে তাঁদের ডাকা হয়। তবে সরকারের তরফে ১৫ জনের প্রতিনিধি দলকে আহ্বান জানানো হয়। যদিও জুনিয়র ডাক্তাররা ৩০ জনের প্রতিনিধির সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। বৈঠকের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের অনুমতি দেওয়া হলেও লাইভ সম্প্রচারের বিষয়ে নাকচ করে নবান্ন। সুপ্রিম কোর্টের মামলাকে এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়। তাই শেষমেষ বৈঠক হয়নি।
মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতেও রাজি মমতা
শেষমেষ বৈঠক না হলেও একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকে মমতা বলেন, “প্রথম দিন থেকেই চেষ্টা করছি আমরা। আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে, আমাদের সরকারকে অসম্মান, অপমান করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা, অপপ্রচার হয়েছে। মানুষ কলকাতায় এসেছিলেন আন্দোলনে, ওঁরা জানতেন না এর মধ্যে রং রয়েছে। আশাকরি মানুষ বুঝতে পারছেন, ওরা বিচার চায় না, ওরা চায় চেয়ার। আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতেও রাজি আছি। আমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই না। আমি চাই, মানুষ বিচার পান, তিলোত্তমা বিচার পান, আর সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পান।”
বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ মমতা
এদিকে বৃহস্পতিবার বৈঠক না হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নবান্ন থেকে এই বিষয়ে মমতা বলেন, “আপনারাও আশায় ছিলেন আজ সমাধান হয়ে যাবে। আমি দুই ঘণ্টা বসে আছি, তিন দিন ধরে বসে আছি। যাঁদের বিরুদ্ধে ওরা অভিযোগ করছে, তাঁদের অনেকেই হয়ত একমাস আগে জয়েন করেছে। অনেককে বৈঠকেও রাখিনি। তার পরও বৈঠক ডেকে, আসবেন বলেও, নবান্নের গেট থেকে যাঁরা এলেন না, আমি ক্ষমা করে দিলাম। অনুরোধ করছি, কাজে যোগ দিন। আর্ত রোগীদের বাঁচান। আর কোনও মৃত্যু যেন না হয় বাংলায়।”
বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা
এর পাশাপাশি এদিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমাও চাইলেন মমতা। তিনি বলেন, “আমি কালও বসেছিলাম। এলেই চলে আসতাম। আমি ঔদ্ধত্য, অহঙ্কার হিসেবে দেখি না এটাকে। বড়রা ছোটদের ভালবাসে। আমি জানি সিনিয়র ডাক্তার কষ্ট করে কাজ করছেন। তাঁদের অভিনন্দন রইল। বাংলরা মানুষের আবেগের কাছে বলব, আমি ক্ষমা চাইছি।”