ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দেশের অধিকাংশ মানুষ সহজলভ্য যাতায়াতের ক্ষেত্রে কম সময়ে ও কম খরচে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে বরাবরই ভরসা রেখে ভারতীয় রেল পরিষেবার ওপর। সেই কারণে ভারতের প্রতি স্টেশনকেও উন্নত মানের গড়ে তোলা হচ্ছে। রাজ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কাজের সুবাদে হোক, বা নিছকই ঘুরতে যাওয়া, হাওড়া স্টেশন ও শিয়ালদহের জুড়ি মেলা ভার। অগনিত মানুষ নিত্যদিন এই স্টেশনগুলি থেকে নিজের-নিজের গন্তব্যে যাতায়াত করেন। আর এই স্টেশনগুলি বহু প্রাচীনকালে নির্মাণ করা হয়েছিল। অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই দুই স্টেশন।
আমরা অনেকেই জানি যে ভারতের দীর্ঘতম রেলওয়ে স্টেশন হল গোরখপুর। এবং ব্যস্ততম রেলস্টেশন হল শিয়ালদহ। কিন্তু দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে স্টেশন কোনটি জানেন? হাওড়া জংশন। এটিই ভারতের বৃহত্তম রেলওয়ে স্টেশন। শুধু বৃহত্তমই নয়, এটি দেশের প্রাচীনতম রেলওয়ে স্টেশনও। আসলে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রেন এই রেল স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করে। তাই এর আরেক নাম রেল নগরী। এই স্টেশনে একটি, দুটি নয়, এখানে রয়েছে ২৩টি প্ল্যাটফর্ম এবং ২৬টি রেললাইন। যা দেশে অন্য কোনো স্টেশনে দেখা যাবে না। কিন্তু সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে এবার সেই স্টেশনই UNESCO হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? আসলে বাস্তবে সত্যিই এমনটা হতে চলেছে।
UNESCO- র তালিকায় নাম উঠতে চলেছে হাওড়া স্টেশনের!
২০১৮ সাল থেকেই হাওড়া স্টেশনকে হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার তৎপরতা শুরু করেছিল রেল বোর্ড। কিন্তু এর মাঝে করোনা মহামারি এসে পড়ায় এই পুরো উদ্যোগ থমকে যায়। ১৮৫৪ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বারা এই স্টেশন নির্মিত হয়। ব্রিটিশ আমলের এই রেল স্টেশনটি আজও দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহ্যশালী প্রতীক হিসেবে। এই হাওড়া শহরের নামকরণ এই স্টেশনের জন্যই হয়েছিল। আর এটিএ ভারতের একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন, যার সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি রেল যোগাযোগ রয়েছে। মৈত্রী এক্সপ্রেস, কলকাতা এবং ঢাকার মধ্যে চলাচল করে উভয় শহরকে সংযুক্ত করে রেখেছে। গত বছর UNESCO-র বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় এ রাজ্যের শান্তিনিকেতনের ঠাঁই হয়েছে।
পুরোনো দস্তাবেজ খুঁজতে ব্যস্ত DRM ভবন
তাইতো হাওড়া স্টেশনের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে স্টেশনের DRM ভবন এবং মূল ভবন ফের UNESCO হেরিটেজ তালিকায় আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব রেলকে চিঠি দেন রেল বোর্ডের প্রাক্তন অর্থ কমিশনার ও ‘রেল এন্থিউসিয়াস্ট সোসাইটি’র প্রধান সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ঐতিহাসিক ভবন বা স্মারক UNESCO তালিকায় হেরিটেজ হিসাবেহাওড়া স্টেশনের নাম তুলতে হলে প্রাচীন বিশেষত্ব প্রমাণ করা খুব জরুরি এবং অবশ্যই সেটিকে অক্ষত থাকতে হবে। আর সেই কারণে হাওড়ার DRM ভবনের প্রাচীনত্ব প্রমাণের দস্তাবেজ খোঁজা শুরু হয়েছে।