লাইনে বিশালাকার লোহার ব্লক, অল্পের জন্য রক্ষা পেল শিলিগুড়িগামী ট্রেন! প্রশ্নের মুখে যাত্রী নিরাপত্তা

Published on:

kalimpong rail line

ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ রেল দুর্ঘটনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি যেন ভুলতেই পারছে না দেশবাসী। প্রতি বছর একের পর এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালেই দেশে একাধিক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২ জুনের ওড়িশার বালাসোর স্টেশনের কাছে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা। আর এবার রাজ্যের বুকে বড়সড় রেল দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেলেন শতাধিক রেল যাত্রী।

বৃহস্পতিবার, কালিম্পং জেলার মংপং ফাড়ির রুংঢুং এলাকায় ঘটে গেল এমনই এক ঘটনা। ওইদিন বিকেল ৩.০৫ নাগাদ ডাউন ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাগরাকোট থেকে শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। তবে মংপং-এর রুংঢুং এলাকায় এসে ট্রেনের চালক লক্ষ্য করেন যে রেললাইনের ওপর দুটি ধাতব বস্তু পড়ে আছে। ব্রেক করার অপশন না থাকায় সেগুলির উপর দিয়েই ট্রেনটি চালিয়ে নিয়ে যান তিনি। এরপর সেবক স্টেশনে পৌঁছে পুরো ঘটনাটি তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে জানান।

WhatsApp Community Join Now

দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারত আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস

ওই একই দিনে বিকেল ৩.৩১ মিনিটে ডাউন আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই রুট দিয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এক্ষেত্রেও ট্রেনের চালক দূর থেকেই রেললাইনের ওপর ধাতব বস্তু দেখতে পান। তবে তিনি আগেভাগে ট্রেনটি থামিয়ে দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে গ্যাংম্যানদের ডেকে রেললাইন পরিষ্কারের ব্যবস্থা করেন। যেহেতু আগের ট্রেনটি ওই ধাতব বস্তুগুলোর ওপর দিয়ে চলে গিয়েছিল, সেগুলো রেল ট্র্যাকের মধ্যে আটকে যায়। অনেক চেষ্টার পর ওই ধাতব সামগ্রী সরানো হয় এবং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

রেল লাইনের উপর কারা ধাতব বস্তু রাখল?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে বা কারা রেল লাইনের উপর এই ধাতব বস্তুগুলি রাখলো? স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে রুংঢুং এলাকায় রেলের ইলেকট্রিক্যাল কাজ চলছিল। সেই কাজের জন্য রেললাইনের পাশে ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করা লোহার বস্তুগুলো ফেলে রাখা হয়েছিল। ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার সাহেদুল হক জানান, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা ঠিকাদারেরা এখানে কাজ করছিলেন। তার দাবি, হয়তো চোরের দল ওই লোহার সামগ্রী চুরি করার চেষ্টা করছিল। যখন ট্রেন চলে আসে, তারা লোহার সামগ্রী রেললাইনের ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। ফলে ট্রেনটি সেগুলোর ওপর দিয়েই চলে গেছে। তবে কপালজোরে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন রেলের আধিকারিকরা

শুক্রবার রেলের আধিকারিকেরা এবং মংপং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে যে, ঠিকাদার সংস্থার পক্ষ থেকে সমস্ত কাজের সামগ্রী সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর রেল নিরাপত্তা এবং রেলপথে ফেলে রাখা সামগ্রীর প্রতি আরও সজাগ থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার শুরু হয়েছে।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন