ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড গোটা দেশ জুড়ে। তবে শুধু ভারতেই নয়, আন্দোলনের আগুন ছড়িয়েছে দেশের বাইরেও। গতকাল রাতের দখলে পা মিলিয়েছে আট থেকে আশি সকলেরই। সাধারণ মানুষ তো বটেই সেলিব্রিটিরাও পিছিয়ে থাকেনি। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে একটাই কথা ‘We Want Justice’। এবার সরাসরি প্রশ্ন সকলের প্রশাসনের উদ্দেশে, এই উন্নত সমাজে দাঁড়িয়ে কোথায় নারীদের নিরাপত্তা? আর কতটা নীচু হবে সমাজ? আর এই আবহেই এবার সত্যি বলতে গিয়েই দলের রোষে পড়লেন তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন।
ঘটনাটি কী?
আরজি কর হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন বিরোধী দিল নানারকমের মন্তব্য তুলে ধরছেন। সাধারণ মানুষেরা ধিক্কার জানাচ্ছেন রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশকে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে। আর এই আবহেই নাকি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনাল হলের বিপরীত ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। CBI এর তদন্তের জন্য মুখ চেয়ে আছেন সকলে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এই বিষয়ে কিছুতেই দলের হয়ে কথা বললেন না তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন। বরং উল্টে বিবেকের দোহাই দিয়ে আরজি কর ইস্যুকে কিছু না বলার ইচ্ছা বহিঃপ্রকাশ করলেন। তবে তিনি শুধু একা মুখ খোলেননি, সরব হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও তৃণমূল কাউন্সিলর কাকলি সেনও।
জানা গিয়েছে তাঁদের মেয়ে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেরই পড়ুয়া। গতকাল শান্তনু সেন এক জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে এই প্রসঙ্গ উঠতেই এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, বিবেক তাড়নায় এখন থেকে দলের হয়ে আরজি কর ইস্যুতে আর কিছু বলবেন না । শুধু তাই নয়, তিনি এও বলেন এই ঘটনার অনেক তথ্য নাকি ঠিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছচ্ছে না। এমনকি তিনি এও বলেন যে এই এক মন্তব্যে যদি মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে মারে, বকে তবুও তিনি এই মন্তব্যই রাখবেন। কিন্তু সত্যিই এই মন্তব্য কাল হল তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেনের। সেদিনই পাল্টা নাম না করে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘ দলের দুই একজন যাঁরা বলছেন আমি ছেড়ে দিলাম মুখপাত্রের পোস্ট। তাঁদের আমরা আগেই সরিয়ে দিয়েছি।’ তার মানে এই যে শান্তনু সেনকে মুখপাত্র পদ থেকে সরানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
কী বলছেন কাকলি সেন?
এদিন কাকলি সেনও আরজি কর প্রসঙ্গে বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এদিন তিনি একজন মা হিসেবে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যারা ধর্ষণটা করেছে তার বাইরেও, যারা ঘটনাটা মদত দিচ্ছেন বা লুকানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কেও ধর্ষকের বাইরে রাখা উচিত না। তিলোত্তমার বাবা মা বলছে, কলেজ যেতে চাইত না তাদের মেয়ে। এমনকি তাঁদের মেয়েও বলেছে, কলেজে যেতে নাকি তারও ভালো লাগছে না। যার ফলে মা হিসেবে কোথাও এটা তিনিও সাফার করছে। তাই ছাত্রদের মধ্যে যদি খোঁজ নেন, অনেকেই বেরিয়ে আসবে। যত শীঘ্র সম্ভব এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকলের শাস্তি চাই।’
প্রসঙ্গত, গতকাল মেয়েদের রাতদখলের আন্দোলনকেও সমর্থন জানিয়েছিলেন শান্তনু সেন ও কাকলি সেন। পাশাপাশি আরজি করের স্বাস্থ্যশিক্ষা নিয়েও এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে। তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে আরজি করে স্বাস্থ্য-শিক্ষা একদম মাটিতে মিশে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে সেখানে কয়েক জন ছাত্র ছাত্রী যদি প্রিন্সিপ্যালকে খুশি করতে পারেন তাহলেই নাকি পরীক্ষার প্রশ্ন জানা যায়, এমনকি খুশি করতে পারলে অনার্স পাওয়া যায়। আর যদি খুশি করতে না পারা যায় তাহলে ভাল পরীক্ষা দিলেও ফেল করতে হয়। এবার দেখার বিষয় CBI এই ঘটনায় কতটা সফলভাবে ধর্ষকদের খুঁজে বের করে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়।