ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সময় যত এগোচ্ছে, ততই যেন ঘনিয়ে আসছে রেমাল। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ অর্থাৎ শনিবার সকালে সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার পর রাতে বাংলাদেশ এবং তার সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের দিকে সরতে থাকবে রেমাল। আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার মাঝরাতে সাগরদ্বীপ থেকে বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝে সুন্দরবনের আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে সুন্দরবনে রেমালের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে । সব থেকে বেশি দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপকূলে। ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
এদিকে রেমালের মোকাবিলা করতে ময়দানে নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ত্রাণ, আশ্রযস্থানগুলি। সঙ্গে ময়দানে নেমেছে পূর্বরেল। ইতিমধ্যেই হাওড়া ও শিয়ালদহ বিভাগের রেলের ম্যানেজার ও আধিকারিকরা বৈঠকে বসেছেন। বেশ কয়েকটি এক্সপ্রেস ট্রেন ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে অথবা যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে নেওয়া হয়েছে একাধিক ব্যবস্থা।
হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে রেমাল সতর্কতা
- এমার্জেন্সি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
- অতি ভারী বৃষ্টিপাতে বৃষ্টির জল সীমারেখা অতিক্রম করলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত কর্মী দিয়ে নিকাশি ব্যবস্থা পরিষ্কার করে রাখা হচ্ছে।
- পরিষেবায় যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে তাই প্রত্যেক স্টেশনে ঘনঘন অ্যানাউন্সমেন্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
- রবিবার সন্ধ্যের পর থেকে টানা কাজের জন্য কর্মীদের অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
- প্রবল ঝড়ে প্ল্যাটফর্মের শেড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টের শীটের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
- জরুরি পরিস্থিতিতে সব জায়গায় পাম্প বসানো হবে।
- শিয়ালদা ও হাওড়া ডিভিশনে যেই স্টেশনগুলোতে বেশি মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলে সেখানে ডিডি সিটস ও আপদকালীন আলো যেন থাকে, তা দেখা হচ্ছে।
- নামখানা, ডায়মণ্ড হারবার, হাসনাবাদের মত জায়গায় ঝড়ের প্রভাব বেশি তাই সেখানে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং দল ও টেলিকম কর্মীদের সঙ্কট মোকাবিলায় সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- রবিবার সকালের মধ্যে শিয়ালদহ, দমদম, বারাসাত, নৈহাটি, রানাঘাট প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চালকদের সাথে ডিজেল লোকো স্থাপন করার নির্দেশ।
- বড় বড় স্টেশনগুলোতে ডিজেইল জেনারেটর ও ইমার্জেন্সি পাওয়ার ব্যাপ আপের বন্দোবস্ত রাখতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের জন্য যে ট্রেনগুলি বাতিল অথবা যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে সেগুলি হল-
২২৮৯০ পুরী-দিঘা সুপারফাস্ট সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস: এই ট্রেনটি ২৫ মে শনিবার পুরী থেকে ছেড়ে খড়্গপুর পর্যন্ত আসবে।
২২৮৯৭ হাওড়া-দিঘা কাণ্ডারী এক্সপ্রেস: ২৬ মে রবিবারের এই ট্রেনটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
০৮১৩৭ পাঁশকুড়া-দিঘা মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশাল: ২৬ মে বাতিল থাকবে।
০৮১৩৯ পাঁশকুড়া-দিঘা লোকাল ট্রেন: রবিবার এই ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
০৮১৩৬ দিঘা-পাঁশকুড়া লোকাল ট্রেন: ২৭ মে সোমবার যে ট্রেনটি ছাড়ার কথা ছিল, সেটা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
০৮১৩৮ দিঘা-পাঁশকুড়া মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশাল: ২৭ মে সোমবার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
২২৮৮৯ দিঘা-পুরী সুপারফাস্ট সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস: রবিবার দিঘার বদলে ট্রেনটি খড়্গপুর থেকে ছাড়বে।
২২৮৯৮ দিঘা-হাওড়া কাণ্ডারী এক্সপ্রেস: রবিবার ২৬ মে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।