ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গার্ডেনরিচকাণ্ডের স্মৃতি ঘিরে এবার নতুন পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা! যার জেরে বিপাকে শহরের কলোনির বাসিন্দারা! চলতি বছর গত মার্চ মাসে গার্ডেনরিচ এলাকায় বহুতল ভেঙে মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন বাসিন্দা। যার ফলে অবৈধ বহুতল নির্মাণ নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে। এমনকি এই দুর্ঘটনার পিছনেও লেগেছিল রাজনৈতিক তকমা। তবে এবার সেই দুর্ঘটনার শিক্ষা নিয়ে নড়ে চড়ে বসলেন কলকাতা পুরসভা।
কেন প্রকাশিত হল বিজ্ঞপ্তি?
জানা গিয়েছে, পুরসভার ৬৬ এবং ৯৫ থেকে ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ অংশ এবং সংযুক্ত এলাকার একাংশ কলোনি এলাকা। সেখানকার বাসিন্দারা বহু বছর ধরেই বিল্ডিং বিভাগের কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই বাড়ি তৈরি করে চলেছেন। এবং বসতি স্থাপন করেছেন। এমনকি, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে অতিরিক্ত নির্মাণও করেছেন তাঁরা। এবং সেই কাজেও বিল্ডিং বিভাগ এর থেকে কোনও রকম অনুমতি নেওয়া হয়নি। কলকাতায় এই বেআইনি নির্মাণ আটকাতে তাই এক নতুন নির্দেশিকা জারি হয়েছে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে।
বিজ্ঞপ্তিতে কী জানানো হয়েছে?
সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, যে সমস্ত বাড়ির ইতিমধ্যেই মিউটেশন হয়ে গিয়েছে, সেগুলি অপরিবর্তিত অবস্থায় মালিকানা পরিবর্তিত হলে নতুন ক্রেতার মিউটেশন পেতে কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে নজরদারি চালানো হবে। কর-রাজস্ব বিভাগ, লাইসেন্স বিভাগ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ নজরদারি চালাবে নতুন ফ্ল্যাট বা বাড়িগুলোর। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে এই বলা হয়েছে যে, অনুমোদিত নকশার বাইরে বাড়ির বাড়তি কোনও অংশ তৈরি হলে সেই অংশটিকে ‘দখলদারি’ হিসাবে মিউটেশনে নথিভুক্ত করা হবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে কর-রাজস্ব বিভাগ সেই তথ্য বিল্ডিং দফতরকে তা জানাবে।
মাথায় হাত কলোনি বাসিন্দাদের
এদিকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দারা নানা অভিযোগ তোলে তাদের এলাকার কর-রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের কাছে। অভিযোগ নিজেদের বাড়ির রেজিস্ট্রি করা যখন হয়েছে, তখন তাঁরা গোটা নির্মাণের মালিক হিসেবেই গণ্য হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কেন তাঁদের দখলদার হিসাবে গণ্য করা হবে? অন্যদিকে পুরসভার কলোনি এলাকার অর্ধেকাংশই যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। তাই এই প্রসঙ্গে যাদবপুরের বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের রেজিস্ট্রি ডিড রয়েছে। তাই তাঁদের দখলদার হিসাবে গণ্য করা উচিত নয়। তাই লোকসভা ভোট মিটলেই পুর কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ আজও দক্ষিণবঙ্গে ঝড় বৃষ্টির দাপট, কতদিন এই স্বস্তিকর আবহাওয়া? জানাল হাওয়া অফিস
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার জেরে এক ঝটকায় বদলি করা হয়েছিল কলকাতা পুরসভার ৩১ জন ইঞ্জিনিয়ার। বদলির তালিকায় ছিল ছ’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও ২৫ জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। যদিও এই বদলি সাধারণ মানুষের কাছে সন্তোষজনক দায়িত্ববোধের প্রসঙ্গ টানলেও কলকাতা পুরসভার কাছে আসলে এটি ছিল রুটিন বিভাগীয় বদলি।