ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: লাল মাটির স্বাদ এবং রবীন্দ্র সংস্কৃতি অনুভব করতে কাজের ছুটি পেলেই ২-৩ দিনের জন্য আমরা ছুটে যাই শান্তিনিকেতনে। আর শান্তিনিকেতন মানেই সকলের প্রিয় সোনাঝুরির খোয়াই হাট। সারাবছরই পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে এখানে। এই হাট যে সবে সবে শুরু হয়েছে তা কিন্তু নয়। প্রায় ২০ বছর আগেই কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী ও হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে শান্তিনিকেতনের বনদপ্তরের জায়গায় হাট চালু হয়েছিল।
হাটের ইতিকথা
আর সেই সময় থেকেই শুরু করে বর্তমানে এই হাট যেন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহের সাত দিনেই হাটে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে। সঙ্গে সাওতালি নাচ বেশ জমিয়ে দেয় গোটা পরিবেশকে। কিন্তু সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে এই পর্যটন কেন্দ্রের জন্য ওই এলাকার জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে বলে। আসলে পরিবেশপ্রেমীদের দাবি গাড়ি, টোটো ও অধিক মানুষের ভিড়ে এলাকার রোজকার শান্তি যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনই, জঙ্গলে মাটি চুরি, একের পর এক গাছ নষ্ট করছে বাইরে থেকে আসা মানুষজন।
সোনাঝুড়ি হাট নিয়ে বড় উদ্যোগ
শুধু তাই নয়, বন দফতরের জায়গায় অবৈধ নির্মাণ, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা হোটেল ও রিসোর্টে প্রাকৃতিক হাটটিরই সৌন্দর্য হারিয়ে ক্রমশ কৃত্রিম হাটে পরিণত হচ্ছে। ফলে পরিবেশ রক্ষার্থে এবার নিয়ন্ত্রণ এর দিকে পা বাড়াল হাট কমিটি। এলাকায় পুরনো পরিবেশ ফেরাতে এক নয়া উদ্যোগ নিতে চলেছে। জঙ্গল বাঁচাতে জমি চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনার পর হাট চারদিন খোলার নির্দেশ দিয়েছে বনদপ্তর। অর্থাৎ আগে যেখানে সপ্তাহে ৭ দিনেই হাট খোলা থাকত, এখন থেকে সেই হাট সপ্তাহে ৪ দিন খোলা থাকবে।
প্রসঙ্গত এই বিষয়ে বোলপুরের বনদপ্তরের আধিকারিক জ্যোতিষ বর্মন জানান, ”জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখেই হাট চারদিন খোলা থাকবে। তিনদিন জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গাছ লাগানো পরিচর্যা চলবে। আসলে এই হাটের কারণে বহু গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে, তাই বনবিভাগ এবং হাট কমিটির যৌথভাবে জঙ্গল সুরক্ষা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে জঙ্গলের কোনও ক্ষতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”