শ্বেতা মিত্রঃ যত সময় এগোচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে পরীক্ষায় বিতর্ক কাটতেই চাইছে না যেন। লাগাতার দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি থেকে শুরু করে আপার প্রাইমারিতে দুর্নীতি…সব মিলিয়ে যাতা অবস্থা হয়ে রয়েছে। তবে এবার আপার প্রাইমারি এবার বড় আপডেট প্রকাশ্যে এল। আর এই আপডেট দেখে চমকে গিয়েছেন সকলে। গত আগস্ট মাসেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে রায় দেওয়া হয়েছিল যে উচ্চ প্রাথমিকে নতুন করে ১৪,০০০ -রও বেশি শিক্ষককে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে। এর জন্য যাবতীয় মেধা তালিকা, কাউন্সিলিং-র জন্য SSC-কে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এই বিষয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দিল। যার ফলে বড় কাজ করতে পারে এসএসসি বলে মনে হচ্ছে।
ফের আপার প্রাইমারি নিয়ে জট
নতুন করে আপার প্রাইমারি নিয়ে বাংলায় জট শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের গণ্ডি পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অবধি গিয়েছে। কিন্তু তারই মাঝে নতুন করে ভাগ্য ঝুলে যেতে চলেছে হাজার হাজার হবু শিক্ষকদের বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আসলে পরীক্ষার নম্বরে কিছু গড়মিল হয়েছে বলে মনে করছে এসএসসি। বিভিন্ন বিষয়ে গরমিল দেখা দেওয়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন করতে পারে বলে খবর।
কী বলছে SSC?
এমন অনেক প্রার্থী রয়েছে, যাঁদের শংসাপত্রের গরমিল রয়েছে। আবার বেশ কয়েকজন প্রার্থীর নম্বরে গরমিল রয়েছে। তাছাড়া, ইন্টারভিউ হওয়ার পরে তথ্য গরমিল পেয়েও বেশ কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আবার বেশ কিছু প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীও রয়েছেন। এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলি নিয়ে আগামী দিনে সমস্যা হতে পারে। যে কারণে এবার স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন করতে পারে। বুধবার এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আধিকারিকদের বৈঠক হয়েছে। তাতেই নাকি এই বিষয়টি উঠেছিল। ফলে আগামী দিনে এসএসসি কী করে এখন সেদিকে নজর থাকবে সকলের।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা
২০১৫ সালে আপার প্রাইমারির এই পরীক্ষা হয়েছিল। সেইসময়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী। পাশ করেছিলেন ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৬০ পরীক্ষার্থী। এমনি তাঁদের মধ্যে প্রশিক্ষিত ছিলেন ১ লক্ষ ৮ হাজার ৩৮০ জন। এরপর মেধাতালিকা প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর। তবে সকলের কপাল এতটাই খারাপ যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেই তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরেও ২০২০ সালে ১১ ডিসেম্বর সেই তালিকা বাতিল হয়ে যায়। এরপর মামলা চায় হাইকোর্টে। এরপর থেকে সেই যে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হল তা এখনও চলছে।
২০২০-র পর ২০২১ সালে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ SSC-কে নিয়োগ করতে বলে কলকাতা হাইকোর্ট। ৪ জানুয়ারি-২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইন ভেরিফিকেশন চলে। ওই বছরেই ২১ জুন ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ পায়। তাতে নাম ছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের। কিন্তু পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তাঁদের নামই নাকি তালিকায় নেই। ফলে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পরবর্তী কালে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়, কিন্তু গ্রিভেন্স নেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখে। এরপর নানা টালবনাহানার পর ২০২৩ সালের ১৬ অগস্ট আবার মেধাতালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাতে ১৩ হাজার ৩৩৩ জনের নাম থাকে। ১৭ সেপ্টেম্বর আবার কাউন্সিলিং হয়। সেই কাউন্সিলিংয়ের পর ডাক পান ৮ হাজার ৯৪৫ জন পরীক্ষার্থী। যদিও তারপরেও অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে বলে দাবি চাকরি প্রার্থীদের। ফলে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা।