ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দুর্নীতি’র অভিযোগে এক ঐতিহাসিক রায় দান করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের SSC নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেলটিই বাতিল করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তাতে প্রায় চাকরিহারা হয়ে যাচ্ছিল ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। পাশাপাশি, যাঁরা ‘সাদা খাতা’ জমা দিয়ে কিংবা মেয়াদ উত্তীর্ণ সময়ে চাকরি পেয়েছেন, সেই ‘অযোগ্য’দের সুদসমেত বেতন ফেরানোর নির্দেশও দিয়েছিল হাই কোর্ট। পাশাপাশি ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ নতুন চাকরি দিতে রাজ্য মন্ত্রিসভা যে সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করেছিল তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল CBI কে।
এবং হাইকোর্টের নির্দেশে এও বলা হয়েছিল যে CBI প্রয়োজন মনে করলে মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যকে এই তদন্তে হেফাজতে নিয়েও জেরা করতে পারবে। আর তখনই ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেখানে রাজ্য ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদও মামলা দায়ের করে। কিন্তু গত ২৯ এপ্রিলের শুনানির পরে, মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে এই তদন্তে স্থগিতাদেশ গত ৭ মে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবং শীর্ষ আদালত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘ যদি যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব হয়, তা হলে গোটা প্যানেল বাতিল করা ন্যায্য হবে না। স্থগিতাদেশ থাকবে বেতন ফেরানোর নির্দেশেও। তবে ২৫,৭৫৩ জনকেই ‘মুচলেকা’ দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তখন যাঁদের নিয়োগ ‘অবৈধ’ বলে প্রমাণ হবে, তাঁদের প্রত্যেককে টাকা ফেরত দিতে হবে। এবং সেই সময় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল ১৬ জুলাই।
সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট
অবশেষে লোকসভা নির্বাচনের এক মাস ১২ দিন পর আজ অর্থাৎ ১৬ জুলাই SSC-র ‘চাকরি বাতিল’ সংক্রান্ত মামলার শুনানির দিন এল। নির্ধারিত সময় মেনে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। সেক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি জানান, তাঁর বেঞ্চ আগে চাকরি বাতিল মামলার সঙ্গে যুক্ত পাঁচ পক্ষের বক্তব্য শুনবে। তার পরেই এ ব্যাপারে পরবর্তী নির্দেশ দেবে। এক্ষেত্রে পাঁচ পক্ষ বলতে বোঝানো হয়েছে রাজ্য, SSC, CBI, মূল মামলাকারী এবং যাঁদের চাকরি নিয়ে বিতর্ক তাঁদেরকে। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের বক্তব্য জানানোর জন্য দু’সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে।
ফের পিছল শুনানির তারিখ
এদিন মামলা আদালতে পেশ হতেই রাজ্য সরকার মামলা সংক্রান্ত এক হলফনামা জমা দিতে চান সুপ্রিম কোর্টকে। এদিকে SSC ও একটি হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। তাই সেক্ষেত্রে দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য নোডাল কাউন্সিলর নিয়োগ করার কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট। পরে আদালত জানায় ওই মামলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত পক্ষেরই বক্তব্য শুনবে তারা। ওই মূল পাঁচ পক্ষ ছাড়া অন্য কেউ যদি তাঁর বক্তব্য জানাতে চান, তবে লিখিত ভাবে পাঁচ পাতার মধ্যে সেই বক্তব্য জানাতে হবে, কিন্তু কোনও পক্ষই নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য দু’সপ্তাহের বেশি সময় পাবে না। তার পরেই এ ব্যাপারে পরবর্তী নির্দেশ দেবে। এবং এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আজ থেকে তিন সপ্তাহ পরে অর্থাৎ অগস্টের শুরুতে।