ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: স্থায়ী শিক্ষকদের মতোই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের বেতনের দাবিতে ২০১৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটি ৮০ জন ছাত্র পিছু একজন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু রাজ্যের স্কুল গুলোতে সেই হারে শিক্ষক না থাকায় স্থায়ী শিক্ষক দের সহযোগিতার জন্য চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। কিন্তু বিদ্যালয়ে স্থায়ী শিক্ষক মতোই কাজ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের কাজ করতে হয়। কিন্তু তবুও তাঁদের বেতন প্রায় তিনগুণ কম। সেই কারণে রাজ্যে বিরুদ্ধে মামলা করা হয় হাইকোর্টে। অনির্বাণ ঘোষ, বরুণ কুমার ঘোষ সহ ১১ জন এই মামলা করেছিল।
চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের জন্য বড় খবর
মামলাকারীদের আইনজীবী অর্জুন রায়চৌধুরী ও পার্থপ্রতিম দত্তরা সেইসময় জানান, ২০০৮ সালে রাজ্য সরকার রাজ্যের স্কুল গুলোতে ক্যাসুয়াল টিচার বা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। তখন প্রায় ৯০০ জন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী এই শিক্ষকদের দিনে ৪ টে ক্লাস করার কথা। কিন্তু শিক্ষকদের দাবি নিয়োগের পর থেকেই স্থায়ী শিক্ষকদের সম পরিমাণ কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে বেতনের ক্ষেত্রে পার্থক্যের অঙ্ক অনেক। তাই স্থায়ীদের মতোই বেতনের দাবিতে ২০১৪ সাল থেকে হাইকোর্টে মামলা চলছিল।
সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা রাজ্যের
দুই পক্ষের মতামত শুনে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন যে স্থায়ী শিক্ষকদের ন্যুনতম বেসিক পে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের দিতে হবে। তবে শুধু শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্যই নয়, চুক্তিভিত্তিক অন্য শিক্ষাকর্মীদের জন্য এই নির্দেশ লাগু হবে। ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চে যখন রাজ্য কার্যত হেরে গিয়েছিল। তখন হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেখানেও খুব একটা লাভ হলো না রাজ্য সরকারের। শেষপর্যন্ত হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ হাইকোর্টের রায় বজায় রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২-২০০৩ সাল থেকে শিক্ষকদের নিয়োগ করা শুরু হয়। কিন্তু তাঁদেরকে স্থায়ীপদে নিয়োগ করা হয়নি। চুক্তির ভিত্তিতে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হতে থাকে। এবার এই আবহে রাজ্য সরকারকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে ন্যূনতম বেসিক পে পেয়ে থাকেন স্থায়ী শিক্ষকরা, সেটাই দিতে হবে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের।